শ্রীমঙ্গলে রোজটি ও হারবাল হানিটি ক্রয়ে আগ্রহ বাড়ছে ভোক্তাদের
বিকুল চক্রবর্তী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত : ০৯:৪৬ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২১ রবিবার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল চায়ের বাজারে আলোচনায় এখন রোজটি ও হারবাল হানি গ্রীণ টি। প্রতিকেজি রোজ চায়ের দাম হাঁকানো হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার টাকা। ব্যতিক্রমী এই চা বাজারজাত করেছে বৃন্দাবনপুর চা বাগান। এটি তাদের ২য় চালান। গত ১৮ আগষ্ট শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে এটি নিলাম করে জালালাবাদ টি ব্রোকাস লিমিটেড। নতুন এ চায়ের খবর পাওয়ার পর অনেক ক্রেতা ছুঠে যাচ্ছেন এই চা ক্রয় করতে। অনেকে অল্প অল্প করে কিনেও আনছেন।
বৃন্দাবন পুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন খান জানান, শ্রীমঙ্গলের এ নিলামে এটি তাদের ২য় চালান ছিলো। তিনি জানান, চা পানের সময় চা পানকারীরা যেন ভালো একটি স্মেল পান সে চিন্তা থেকে তিনি এ রোজটি তৈরী করেন। উৎকৃষ্টমানের ব্ল্যাক টি বিটি টু-এর সাথে গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি মিশিয়ে এই রোজ টি তৈরি করা হয় বলে জানান তিনি। রোজটির পাশাপাশি তিনি একই অকশনে তুলেছেন হারবাল হানি টি এবং স্পেশাল স্টং লিকারের ব্লাকটি। হানিটি বিক্রি হয়েছে ২১শত টাকা কেজি এবং স্টং লিকারের ব্লাকটি বিক্রি হয়েছে ৬শত ১০ টাকা কেজি।
শ্রীমঙ্গলস্থ চা নিলাম পরিচালনাকারী ব্রোকার হাউজ জালালাবাদ টি ব্রোকার্স লিমিটেডের পরিচালক মো: শওকত আলী খান জানান, বৃন্দাবনপুর চা বাগান বিশেষ এই চা টি উৎপাদন করে। আর তারা এটি নিলাম করেছেন। যা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকা প্রতি কেজি। আর এটি ক্রয় করেছে শ্রীমঙ্গল হবিগঞ্জ রোডের মাস্টার টি।
শ্রীমঙ্গল মাস্টারটি এর স্বত্তাধিকারী সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, রোজটিটি খুবই ভালো মানের একটি চা। যা পান করার সময় গোলাপ ফুলের ফ্লেভার পাওয়া যাবে। গত মে মাসে বৃন্দাবন পুর চা বাগান এটি প্রথম বাজারজাত করেছিলো। তখন এর অনেক চাহিদা ছিলো। কিন্তু মাল কম থাকায় ক্রেতাদের চাহিদা পুরণ করা যায়নি। এ যাত্রায় এটি বাজারে আনায় তারা খুশি। তিনি জানান, এটি ২ হাজার টাকা কেজিদরে ক্রয় করেছেন। ভ্যাটসহ এর কেজি পড়েছে ২৩শত ৫০ টাকা। তিনি কাস্টমারের কাছে এটি প্রাইকারী বিক্রি করছেন ৩ হাজার টাকা ও খুচরা সাড়ে তিন হাজার টাকা কেজি ।
জালালাবাদ টি ব্রোকার্স এর এমডি খায়রুজ্জামান শ্যামল জানান, একই অকশনে তারা উন্নত মানের ব্লাকটিও বিক্রি করেছেন। যার প্রতিকেজি অকশন প্রাইজ ৬শত ১০ টাকা ভ্যাট ট্যাক্সসহ ৭শত১৩ টাকা কেজি। এটিও তৈরী করেছে বৃন্দাবনপুর চা বাগান। এটি স্টং লিকারের চা। যা অল্প পাতাতেই গাঢ় লিকার হবে।
শ্রীমঙ্গল টি প্ল্যান্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জহর তরপদার বলেন, শ্রীমঙ্গলের এই চা নিলাম কেন্দ্রটি চালু হয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন চা বাগানে তাদের তৈরী চা বিক্রির জন্য শ্রীমঙ্গল অকশন হাউসে নিয়ে আসছেন। তার সাথে প্রায়শ্চই সংযুক্ত হচ্ছে ভিন্ন স্বাদের, মানের বিশেষ ধরনের চা। রোজটি তাদেরই একটি। তিনি জানান, এ চা পান করলে চায়ের ভেষজ গুনাগুনের সাথে বেশ কিছু অতিরিক্ত আরো কিছু উপকারিতাও পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য দেশের ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজারেই রয়েছে ৯২টি চা বাগান। আর জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বড় ১৯টি এবং ফাঁড়িসহ মোট ৪৭টি চা বাগান রয়েছে । এ সব বাগান থেকে প্রতি অকশনেই কোন না কোন নিত্য নতুন চা বাজারজাত করছেন চা বাগান ব্যবস্থাপকরা।
আরকে//