ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

দুদকের সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করে চবিতে দরপত্র আহ্বান

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:০৪ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২১ সোমবার

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সিদ্ধান্তকে অমান্য করে একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ হোসেন ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুদক বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বললেও তাদের দিয়েই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ একাডেমিক ভবন (২য় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ) নির্মাণ প্রকল্পে অদক্ষ ও অযোগ্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেন এবং একই দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি এবং সকল ধরনের কমিটি থেকে বিরত রাখতে সুপারিশ করে দুদক।

জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ও ২৯ জুন অনুষ্ঠিত এস/ই ১৭, ২০, ২১ ইত্যাদি স্পট কোটেশনের জন্য স্বল্পমূল্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির ১৩৭ ও ১৩৮তম সভায় সভাপতি রাখা হয় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ হোসেনকে। সদস্য হিসেবে রাখা হয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেন, মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নাসির উদ্দিন এবং সহকারী রেজিস্ট্রার এনামুল হককে।

প্রকৌশল দপ্তরের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, দুর্নীতিকে আরও বিস্তৃত করার জন্য এবং পছন্দের লোককে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্যে দুদকের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করা করা হচ্ছে এবং নিয়মিত অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যা সম্পূর্ণভাবে দুদকের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে।

দুদক কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত হওয়ার পরও দরপত্র আহ্বানে অংশ নিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেন বলেন, আমরা জানি আমাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রশাসন নিষেধ করলে আমরা কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান করতাম না।

তবে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও প্রধান প্রকৌশলীর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান। তিনি বলেন, তখন দপ্তরটিতে আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আমার সঠিক জানা নেই।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার প্রেরিত স্মারক নং ০০.০১.১৫০০.৬২২.০২.০৪৫.২০/চট্টগ্রাম-১/ অনুসারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ একাডেমিক ভবন (২য় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ) নির্মাণ প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় দুদক জি কে বি এন্ড কোং লিঃ ও দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েট লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

একই প্রকল্পে দরপত্র মূল্যায়নে অযোগ্যতা ও অদক্ষতা প্রমাণ পাওয়ায় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ হোসেন, একই দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার-১ মোঃ মাহবুব আলম এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি গ্রহণ করতে বলা হয়।

এবিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, এবিষয়ে আমি অবগত নই। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।

এএইচ/