ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বন্যার্তদের সহায়তায় হুয়াওয়ে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:২৮ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৩২ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

নেত্রকোনায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এগিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ইউএনও, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, নেত্রকোনার ডেপুটি কমিশনার এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী। 

সাম্প্রতিক সময়ে বন্যার ফলে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশজুড়ে বন্যার কারণে অনেক জেলা প্রতিকূল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বন্যা দেশজুড়ে মানুষকে অসহায় পরিস্থিতিতে ফেলেছে এবং তাঁদের জীবন ও জীবিকাকে করে তুলেছে বিপন্ন। দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমন অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে। সাম্প্রতিক বন্যার  পরিপ্রেক্ষিতে হুয়াওয়ের উদ্যোগ ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ- হিয়ার ফর ইউ’র অংশ হিসেবে, আজ হুয়াওয়ে নেত্রকোনা জেলার দুঃস্থ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে এই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। অসহায় এ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হুয়াওয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবারের মাঝে জরুরি খাদ্যদ্রব্য, যেমন: চাল, মসুর ডাল, আলু, ওরাল স্যালাইন, চিনি, ময়দা ও অন্যান্য জিনিস বিতরণ করেছে।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন, নেত্রকোনার ডেপুটি কমিশনার কাজী মো. আবদুর রহমান, খালিয়াজুরীর ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম এবং খালিয়াজুরীর চেয়ারম্যান সুমন চক্রবর্তী।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “প্রথমেই, আমি হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই এবং দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের বিকাশে অবদান রাখার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বিনির্মাণের পথে রয়েছি এবং ডিজিটাল কানেক্টিভিটিই ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদণ্ড। হুয়াওয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল হাইওয়ে গড়ে তুলতে সহায়তা করছে, এজন্য আমরা হুয়াওয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সেবাদানের কারণে আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। তারা ২২ বছর ধরে এদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রেও সহায়তা প্রদান করছে।”  

তিনি আরও বলেন, "প্রাকৃতিক কারণে হাওড় অঞ্চলের মানুষের জীবন দেশের অন্য সকল অঞ্চলের সাথে মিলে না। সমতল ভূমির মানুষের পক্ষে অনুমান করাও কঠিন যে এমন কোনো জনপদ আছে, যা বর্ষায় সমুদ্র হয়ে যায়। আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই বিভিন্ন সময় আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে হুয়াওয়ে সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। বাংলাদেশের দুর্গম একটি অঞ্চলে এভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া একটি বিরল দৃষ্টান্ত। হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ নিজেরা উপস্থিত থেকে এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়েছে। এজন্য আমি হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী ও হুয়াওয়েকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।”

হুয়াওয়ে বাংলাদেশে প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, “এ ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচি বন্যাদুর্গত অঞ্চলে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমাদের ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ-হিয়ার ফর ইউ’ শীর্ষক একটি সামগ্রিক উদ্যোগেরই প্রচেষ্টা। এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করতে কাজ করে যাবো। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করি সেসব কমিউনিটিতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পেরে গর্বিত। ভবিষ্যতে আমরা এক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখতে চাই।” 

নেত্রকোনার ডেপুটি কমিশনার কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখা ছাড়াও   খালিয়াজুরী উপজেলার বন্যা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রথমেই আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। সরকারের প্রচেষ্টা ছাড়াও, যেসব প্রতিষ্ঠান এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের অবদান মানুষকে বৈশ্বিক মহামারি এবং বন্যার কারণে সৃষ্ট নেতিবাচক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সুযোগ করে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে, এই ত্রাণ সামগ্রী তাদের বিশেষভাবে সহায়তা করবে।”

খালিয়াজুরীর ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, “বিগত তিন বছর ধরে এ অঞ্চলে বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে হুয়াওয়ে। এ হাওড় অঞ্চল বছরের বেশিরভাগ সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমন অবস্থায় আমি মনে করি অন্তত ১৫ থেকে ১৬ হাজার মানুষ ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচির অধীনে সহায়তা পাবে। আমি আশা করি এ কর্মসূচি সম্প্রসারিত হবে এবং হুয়াওয়ে ভবিষ্যতেও খালিয়াজুরীর মতো দুর্গম এলাকাসমূহে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবে।”

“এই এলাকা বছরের ছয় মাস প্লাবিত থাকে এবং আর ছয় মাস লাগে শুকাতে। প্রতিবছর এমন ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচি আয়োজনের জন্য আমি হুয়াওয়ে এবং আমাদের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও এ সহায়তা কর্মসূচির পরিধি বিস্তৃত হবে,” বলেন খালিয়াজুরীর চেয়ারম্যান সুমন চক্রবর্তী। 

সম্প্রতি, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখার প্রত্যয়ে হুয়াওয়ে ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি উদ্যোগ শুরু করেছে। এ উদ্যোগের অধীনে, এ মাসের শুরুতে অভিযাত্রিক স্কুলে ডিজিটাল শিক্ষামূলক ডিভাইস ও স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছিল। এই ত্রাণ বিতরণ উদ্যোগের মতো, হুয়াওয়ে আগামী দিনেও স্থানীয় মানুষের সামাজিক উন্নয়নে পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন হুয়াওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।  

আরকে//