চা শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা ও জেন্ডার বাজেট নিয়ে আলোচনা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৪ এএম, ২৭ আগস্ট ২০২১ শুক্রবার
চা বাগানের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা এবং জেন্ডার রেসপন্সিভ পরিকল্পনা ও বাজেট (জিআরপিবি) বিষয়ক জাতীয় ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিভিন্ন অংশীজনের অংশগ্রহণে আলোচনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল চা বাগানের নারী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সামাজিক সুরক্ষা ইস্যুতে ধারণাগত ঐক্যমতে পৌঁছানো এবং জাতীয় পর্যায়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশলে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা।
বাংলাদেশে ইউএন যৌথ কর্মসূচির অধীনে ‘সিলেট বিভাগীয় চা বাগানের নারী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করছে চারটি ইউএন সংস্থা আইএলও, ইউএনএফপিএ, ইউনিসেফ এবং ইউএন উইমেন।
ইউএন উইমেন বাংলাদেশের তপতি সাহা এবং ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট নিলুফার আহমেদ করিম ওয়েবিনারে সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠীত দুইটি কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন এবং জেন্ডার রেসপন্সিভ পরিকল্পনা ও বাজেট বিষয়ে আলোকপাত করেন। বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত দুই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছিলেন স্থানীয় সরকার, বাংলাদেশ চা সংসদ, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন, ইউএন এজেন্সি ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিবৃন্দ। যেখানে তুলে ধরা হয়-নারী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবায় অভিগম্যতা, মাতৃত্বকালীন সহায়তা ও সেবা, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা ও সেবা, শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি ও পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ, নারী শ্রমিকের দীর্ঘ কর্মঘন্টা ও বিশ্রামের সুযোগ না থাকা। দুই কর্মশালায় উঠে আসা যেসব সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হয়, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নীতিমালায় নারী শ্রমিকের চাহিদাকে অন্তর্ভুক্ত করা, নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে চা বাগানে নারী শ্রমিকের দক্ষতা, সুযোগ এবং নেতৃত্ব বিকাশের জন্য সকল স্তরের অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় করা।
ইউএন উইমেন এর সংস্থা প্রধান গীতাঞ্জলি সিং স্বাগত বক্তব্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন যেগুলো হচ্ছে জেন্ডার সমতার জন্য আর্থিক বিনিয়োগ, নারীর জীবনে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে সঠিক বরাদ্দ দেওয়া এবং জেন্ডার রেসপন্সিভ সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
ইউএন যৌথ কর্মসূচির সমন্বয়ক আলেক্সিয়াস চিচাম বলেন, ‘আমরা যখন ইউএন যৌথ কর্মসূচির অধীনে চা বাগানে কাজ করছি, তখন সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আইন ও নীতিমালায় যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা চা বাগানের সমস্যাগুলোর দীর্ঘমেয়াদী সমাধান করতে পারবো।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা একটি সার্বিক সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোর উপর জোর দেন এবং তিনি জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেটে চা বাগানের নারী শ্রমিকের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভূমিকার উপর জোর দেন।
জেন্ডার ও সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ ফেরদৌসি সুলতানা বেগম এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বজলুল হক খন্দকার চা শ্রমিকের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ চা সংসদ থেকে তাহসিন আহমেদ চৌধুরী চা শ্রমিকের কল্যাণ ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফেরদৌসি বেগম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. নায়েব আলী, ইউএনআরসি কার্যালয়ের মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান প্রমূখ বক্তব্য দেন।
সূত্র : বাসস
এসএ/