২৯ আগস্ট, গণমাধ্যমের ইতিহাসে কালো অধ্যায় (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২১ রবিবার
২৯ আগস্ট, ২০০২। গণমাধ্যমের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের দিন। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আইনী মারপ্যাঁচ ও রাজনৈতিক কুটচালে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল একুশে টেলিভিশন। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের এ ঘটনার পর ২০০৫ সালে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয় একুশে পরিবার। শেষ পর্যন্ত সব বাধা পেরিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ স্যাটেলাইট সম্প্রচারে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মাটি-মানুষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের দর্পন হয়ে ওঠে একুশে টেলিভিশন।
২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল। বাঙালীর চিরায়ত উৎসব নববর্ষের দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ঘোষণায় যাত্রা শুরু করে বেসরকারি খাতে প্রথম টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল একুশে টেলিভিশন।
যাত্রার শুরুর পর থেকেই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান দিয়ে একুশে টেলিভিশন জয় করে কোটি বাঙালির মন। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো একুশে।
২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয় একুশে টেলিভিশন। আইনী মারপ্যাচে জোর করে কণ্ঠরোধ করা হয় একুশের। সম্প্রচার বন্ধে আদালতের নির্দেশনা না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করার কারণেই বন্ধ করা হয়েছিলো একুশে টেলিভিশন।
এ বিষয়ে তৎকালীন একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক ও বর্তমান এটিএন বাংলার চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর জ ই মামুন বলেন, আদালতের নির্দেশনার মধ্যে কোথাও সম্প্রচার বন্ধে করে দেয়ার কথা ছিল না। নির্দশনা ছিল- লাইসেন্স নিয়ে যেসব ত্রুটি আছে সেগুলো সংশোধন করা বা যে ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেটি সংশোধন করা। অথচ আদালতে সেই রায় লেখা শেষও হয়নি, তৎকালীন সরকারের লোকজন এসে যব যন্ত্রপাতি সীজ করে নিয়ে যাবে!
আসলে এটি ছিল শুধুমাত্র প্রতিহিংসা এবং এক ধরণের ক্ষোভ থেকেই এটি তারা করেছে বলেই দাবী করেন প্রাক্তন এই একুশের কর্মী।
জন্মলগ্ন থেকেই একুশে টেলিভিশন গণমানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছিলো বলেই বিএনপি-জামাত জোট মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছিলো বলে মনে করেন জ ই মামুন। তিনি বলেন, একুশে টেলিভিশন বন্ধ করাটা আসলে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের একটা রাজনৈতিক কৌশল ছিল। কারণ, তাদের আদর্শ থেকে একুশের আদর্শ একেবারেই ভিন্ন ছিল।
তিনি আরও বলেন, একুশে টেলিভিশন মূলত মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো। এবং বাংলাদেশকে সারা পৃথিবীর সামনে একটা ইতিবাচক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরার কাজ করত। যেটা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের একদমই পছন্দ ছিল না।
২০০৫ সালে মানুষের ভালোবাসা আর আইনি লড়াইয়ে একুশে টেলিভিশনকে সম্প্রচারের বৈধতা দেন আদালত। রায়ের পরও ২০০৭ সাল পর্যন্ত পুর্ণাঙ্গ সম্প্রচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে নানা জটিলতায়। দ্বিতীয় যাত্রায়ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করেই পথ চলছে একুশে টেলিভিশন।
ভিডিওতে দেখুন-
এনএস//