ভ্যাট গোয়েন্দা আলিশা মার্ট থেকে ভ্যাট ফাঁকি বাবদ ৫২ লাখ টাকা আদায়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৪০ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২১ মঙ্গলবার
রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠান আলিশা মার্ট-এ অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। এই ভ্যাট ফাঁকির টাকা ইতোমধ্যে আদায় হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্মে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে মর্মে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৮ জুন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন এর নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ধরণের সামগ্রী অনলাইনে অর্ডার গ্রহণ করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে; কিন্তু তাদের প্রাপ্ত কমিশনের উপর আরোপিত ভ্যাট যথাযথভাবে জমা প্রদান করে না।
অভিযানে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আরিফ আহমেদ ভ্যাট গোয়েন্দাকে সহযোগিতা করেন এবং তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট সংশ্লিষ্ট দলিলাদি উপস্থাপন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করে হিসাব বিবরণী জব্দ করা হয়।
অভিযানে প্রাপ্ত দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি ১ জানুয়ারি/২০২১ হতে ৩১ মে/২০২১ পর্যন্ত পাঁচ মাসে মোট ১৮১,৭৬,৬১,৮৬৮ টাকার পণ্য বিক্রয় করে; উক্ত সময়ে পণ্য বিক্রয়ের বিপরীতে ক্রয় মূল্য ১,৭৫,৩০,৮৭,৩৯৬ টাকা।এক্ষেত্রে কমিশন বাবদ প্রাপ্ত ৬,৪৮,৭৪,৪৭১ টাকা, যার বিপরীত ৫% হারে প্রযোজ্য ভ্যাট ৩২,৪৩,৭২৪ টাকা।অনলাইনে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩২,৪৩,৭২৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনলাইন প্রতিষ্ঠানটি তা পরিপালন করেনি। এক্ষেত্রে উক্ত মেয়াদে কমিশন বাবদ অপশোধিত ভ্যাট এর পরিমাণ ৩২,৪৩,৭২৪ টাকা পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায় যে, লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে উল্লিখিত সময়ে বিভিন্ন কেনাকাটার উপর উৎসে ভ্যাট ৪,৪১,৯০,৪৭৭ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাট এর পরিমাণ ছিল ৪,৬১,৭৫,৯১৩ টাকা।এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১৯,৮৫,৪৩৬ টাকার ফাঁকি উৎঘাটিত হয়।
অর্থ্যাৎ, উল্লেখিত ৫ মাসে কমিশনের উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩২,৪৩,৭২৪ টাকা এবং উৎসে ভ্যাট বাবদ ১৯,৮৫,৪৩৬ টাকাসহ সর্বমোট ৫২,২৯,১৬০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।
ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরে অনুষ্ঠেয় শুনানীতে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ মেনে নিয়ে স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রণোদিত হয়ে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
ভ্যাট ফাঁকির সাথে জড়িত থাকায় অনলাইন প্রতিষ্ঠান আলিশা মার্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলার প্রতিবেদন ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হয়েছে। একইসাথে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম আরো মনিটরিং করা ও অন্যান্য আর্থিক অনিয়ম আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
কেআই//