নিউজিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দাপুটে জয় টাইগারদের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:০২ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার | আপডেট: ০৭:১৮ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার
নিউজিল্যান্ডকে তাদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অলআউট করে জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করে নেয় বাংলাদেশ। মাত্র ৬১ রানের লক্ষ্য ছিল টাইগারদের। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা ধাক্কা খেলেও ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ৭ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরপর ৫ ওভার হাতে রেখে ৭ উইকেটে সহজ জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজকের জয়ের মাধ্যমে পাঁচ ম্যাচের সিরিজের ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এটিই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডবধ। এর আগে দশ ম্যাচের প্রতিটিতেই হার দেখতে হয়েছিল টাইগারদের।
শুরুতেই দুই ওপেনার নাইম শেখ ও লিটন দাস মাত্র ১ রান করেই আউট হয়ে যান। শর্ট কভারে ক্যাচ হয়ে ফেরেন নাইম। অ্যাজাজ প্যাটেলের করা পরের ওভারে লিটন পড়েন স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে।
এরপর অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান হাল ধরেন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার শেষ পর্যন্ত দলীয় ৩৭ রানের মাথায় সাজঘরের পথ ধরেন। ৩৩ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করে তিনি হন রবিন্দ্রর শিকার।
তবে বাকি পথটা সহজেই পাড়ি দিয়েছেন মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩১ বলে ২৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তারা। মাহমুদউল্লাহ ২২ বলে ১৪ আর মুশফিক ২৬ বলে ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এরআগে বাংলাদেশের বোলিং তোপে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে মাত্র ৬০ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারী নিউজিল্যান্ড। নিজেদের টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন রান কিউইদের। তবে যৌথভাবে। এর আগেও একবার ৬০ রানে অলআউট হয়েছিলো কিউইরা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথাম। ইনিংসের শুরুতেই অফ-স্পিনার মাহেদি হাসানের হাতে বল তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
ইনিংসের তৃতীয় বলেই দলকে উইকেট শিকারের আনন্দে নাচিয়ে তোলেন মাহেদি। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রাচিন রবীন্দ্রকে খালি হাতে বিদায় দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারেও আক্রমনে আরেক স্পিনার নাসুম আহমেদকে আনেন মাহমুদুল্লাহ। নাসুম কোন সাফল্য না পেলেও পরের ওভারে সাকিব আল হাসান সফল হন। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে উইং ইয়ংকে বোল্ড করেন সাকিব। ১টি চারে ৫ রান করেন তিন নম্বরে নামা ইয়ং।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেট নিতে না পারলেও, দ্বিতীয় ওভারে জোড়া আঘাতি হানেন নাসুম। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ১ ও টম ব্লান্ডেলকে ২ রানে থামান নাসুম। এতে ৪ ওভার শেষে ৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ড।
এ অবস্থায় দলকে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন অধিনায়ক লাথাম ও হেনরি নিকোলস। সর্তকতার সাথে খেলে স্ট্রাইক বদলেই মনোযোগ ছিলো তাদের। উইকেটে টিকে থাকতে গিয়ে ১০ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের রান উঠে মাত্র ৪০ রান। এসময় প্রথম তিন স্পিনারসহ, মাহমুদুল্লাহ, মুস্তাফিজও লাথাম-নিকোলস জুটি ভাঙ্গতে পারেননি।
১১তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসেই উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ২৫ বলে ১টি চারে ১৮ রান করা লাথাম শিকার হন সাইফুদ্দিনের। একই ওভারে নিকোলসের বিদায়ও নিশ্চিত করেন সাইফুদ্দিন। ২৪ বলে ১টি চারে ১৭ রান করেন নিকোলস।
মাঝে ১২তম ওভারে নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা কোল ম্যাককঞ্চিকে খালি হাতে বিদায় দেন সাকিব। এতে ৪৯ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এক পর্যায়ে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে কিউইরা। সেই শঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যিই হয়।
১১ রানের মধ্যে শেষ ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫ ওভারে ৬০ রানে থামে কিউই ইনিংস। নিজেদের টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন স্কোর নিউজিল্যান্ডের। তবে এর আগেও একবার এই ৬০ রানেই অলআউট হয়েছিলো কিউইরা। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৬০ রানে অলআউট হয়েছিলো তারা।
নিউজিল্যান্ডের শেষ তিন উইকেট পকেটে ভরেছেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। ১৩ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া নাসুম-সাকিব-সাইফুদ্দিন ২টি করে উইকেট নেন। মাহেদি নেন ১ উইকেট।
এসি