বিপর্যয়ের মুখে রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্প (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২০ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ শুক্রবার
সম্ভাবনার আলো জ্বেলে এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্প। এখাতের একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা শিল্পটিকে খাদের কিনারে দাঁড় করিয়েছে। আর বিপর্যয়ে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে করোনা মহামারি। এমন বাস্তবতায় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ১৫০ বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বাণিজ্য বাংলাদেশের জন্য অধরাই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০০৮ সালে জার্মাানিতে একটি সমুদ্রগামি জাহাজ রপ্তানি করে আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড স্লিপওয়েজ লিমিটেড। এরপর এ শিল্পে যুক্ত হয় চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, এফএমসি ডকইয়ার্ড, খান ব্রাদাস শিপ বিল্ডার্স-সহ প্রায় কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি। দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত ১০টি।
জাহাজ রপ্তানি থেকে আয়ের তুলনামূলক চিত্র নিম্নরূপ
অর্থবছর রপ্তানি
২০১৩-১৪ ০.৪৪ মিলিয়ন ডলার
২০১৪-১৫ ১৫.৯২ মিলিয়ন ডলার
২০১৫-১৬ ১৯.৮৯ মিলিয়ন ডলার
২০১৬-১৭ ৬৫.৬১ মিলিয়ন ডলার
২০১৭-১৮ ৩০.০৫ মিলিয়ন ডলার
২০১৮-১৯ ৪.৭৩ মিলিয়ন ডলার
২০১৯-২০ ১১.৩২ মিলিয়ন ডলার
২০২০-২১ ০.২০ মিলিয়ন ডলার
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো- ইপিবি বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাহাজ রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করে মাত্র দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার। তবে ধারবাহিক প্রবৃদ্ধির পর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এখাতের আয় দাঁড়ায় ৬৫ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু এর পর থেকেই নিম্নমুখী জাহাজের রপ্তানি বাণিজ্য। সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি নেমে আসে মাত্র দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
এদিকে, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিভিন্ন ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ দিয়েছে, যার বেশির ভাগই এখন খেলাপি। আনন্দ শিপইয়ার্ডের কাছে সাত ব্যাংকসহ ১৪ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা প্রায় দু-হাজার কোটি টাকা। ১৯ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণে ডুবতে বসেছে এখাতের অপর বড় প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।
খান ব্রাদার্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল কবির খান বলেন, লেবার কস্ট সেভ করার পরেও, ব্যাংক ইন্টারেস্ট এবং অন্যান্য সার্ভিসে গিয়ে তারা পিছিয়ে পড়ছেন।
জাহাজের বৈশ্বিক রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে এগিয়ে চীন। দেশটি এ শিল্পের মূল কাঁচামাল ইস্পাতে ১৫ শতাংশ ভর্তুকির পাশাপাশি রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়। জাহাজের রপ্তানি বাণিজ্যে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশকেও তাই নতুন করে পরিকল্পনা সাজাতে হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
বুয়েটের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ড. এন এম গোলাম জাকারিয়া বলেন, ‘এটি একটি হেভি ইনভেস্ট বিজনেস। শিপভেদে একশ’ থেকে একহাজারটা উপাদান লাগে নির্মাণকাজে। প্রতিটি উপাদানই বাইরে থেকে আনলে এবং সেই সাথে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গ্রো করা না গেলে এই বিজনেস সাস্টেইনেবল হবে না।’ ফলে এখাতে নতুন কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তেলাও সময়সাপেক্ষ বলে জানান তিনি।
দেুখন ভিডিও :
এসবি/এসএ/