আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পর্দা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০২ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবারও পাঠদান শুরু হয়েছে। তবে শ্রেণিকক্ষের মধ্যে পর্দা ঝুলিয়ে কিংবা বোর্ড বসিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদাভাবে বসতে হচ্ছে।
শ্রেণিকক্ষে ঝুলন্ত পর্দার দুই পাশে ছেলে ও মেয়েদের বসিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কাবুলের আভিসেনা ইউনিভার্সিটির একটি ছবিতে এমনটাই দেখা গেছে।
আফগানিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের দিকে নজর রাখা পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, মৌলিক সহায়তা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে চাইলে নারী অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে তালেবানকে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকার সময় মেয়েদের শিক্ষা কিংবা চাকরি করা নিষিদ্ধ করেছিল তালেবান।
তবে এবার তালেবান নিজেদের অনেকটা নমনীয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কট্টর এই দলটি ইসলামী আইন অনুযায়ী নারীদের সব অধিকার দেওয়ার কথা বললেও পুরো বিষয়টি কেমন হবে তা স্পষ্ট করেনি।
কাবুল, কান্দাহার এবং হেরাতের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে মেয়েদের আলাদা বসতে হচ্ছে। তাদের চলাচলও সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
শ্রেণিকক্ষে পর্দা দেওয়ার বিষয়ে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আঞ্জিলা বলেন, “এটা মানা যায় না। ক্লাসে ঢুকে ভয় লাগছিল। আমরা ধীরে ধীরে ২০ বছর আগের সময়ে ফিরে যাচ্ছি।”
২১ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী জানান, ‘তালেবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার আগেও ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে আলাদাই বসত। কিন্তু এখন তাদের মাঝখানে পর্দা দেওয়া হয়েছে’।
পাঠদান কীভাবে চলবে, সে জন্য আফগানিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি সমিতির পক্ষ থেকে নীতিমালাও করে দেওয়া হয়েছ, যার মধ্যে ছাত্রীদের বোরখা পরা এবং তাদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ রাখার শর্তও রয়েছে।
এছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নারী শিক্ষক রাখার কথাও বলা হয়েছে ওই নীতিমালায়। মেয়েদের আলাদা করে পাঠ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে অথবা পর্দা দিয়ে আলাদা করা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করেতে হবে।
তবে এসব তালেবানের পক্ষ থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তালেবানের কাছ থেকেও এ প্রসঙ্গে কোনো বক্তব্য মেলেনি।
‘যুদ্ধ’ শেষ হওয়ার পর শিক্ষাদান আবার শুরু এবং নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে রাখার কথা গত সপ্তাহেই জানানো হয়েছিল তালেবানের পক্ষ থেকে।
‘সীমিত সম্পদ এবং জনবল’ বিবেচনায় নিলে শ্রেণিকক্ষ ভাগ করে দেওয়াকে ‘খুবই যৌক্তিক’ বলেছিলেন তালেবানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ।
হেরাত ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক বলেছেন, প্রথমে মেয়ে, পরে ছেলেদের- এক ঘণ্টার ক্লাস এভাবেই নেবেন তিনি।
কাবুলের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শের আজম জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদাভাব পাঠদান করার কথা বলা হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানেও।
সূত্র : রয়টার্স
এমএম/এএইচএস/এসএ/