পিপিপি কিংবা জিটুজি-ই ফেরাবে পাটের সুদিন (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৩০ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার
সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা সরকারি পাটকলগুলো পিপিপি বা জিটুজি ভিত্তিতে চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ থাকলেও, থেমে নেই পাটের চাষ। রপ্তানির চিত্রও ইতিবাচক। গেল অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের আয় ১১৬ কোটি মার্কিন ডলার। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই এই অর্জন, এঅবস্থায় রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল গুলো চালু করা গেলে পাটের সুদিন ফিরবেই।
এক সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ আসতো যেই পাট থেকে তার ঐতিহ্য ধরে রাখা যায়নি বিভিন্ন সময়ের ভুলনীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এতে শিল্প যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় হয়েছে, তেমনি কৃষকও আগ্রহ হারিয়েছে পাট চাষে। তবে এবারে পাটের সুদিন ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৯০ এর দশকে দেশের ১২ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হতো। কিন্তু রাষ্টায়ত্ব পাট কলগুলোর অবস্থা নাজুক হতে থাকায়, কমতে থাকে অর্থকরি এই ফসলের চাষ। এক সময় যা সাড়ে ৪ লাখ হেক্টরে নেমে আসে।
তবে পাট ও পাটপণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ায় বেসরকারি খাতে গড়ে উঠেছে বেশকিছু পাটকল। এতে কাঁচাপাটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরাও ঝুঁকছেন পাট চাষে। প্রায় ৮ লাখ হেক্টর জমিতে হচ্ছে পাটের আবাদ। এবারেও পাটের ভালো চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ৭৪ লাখ বেল পাট উৎপাদন হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে ৮৬ লাখ বেল পাট উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের।
এদিকে, দেশে এখন পর্যন্ত পাটের ৫২টি নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। পাটের বালাই দমনসহ উৎপাদন বাড়াতে আবিষ্কার করা হয়েছে ১শ’টির বেশি চাষ প্রযুক্তি। বছরে একই জমিতে অন্তত দুবার পাটের আবাদের গবেষণা নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের খামার ব্যবস্থাপনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. একেএম শাহাদাত হোসেন জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এবং মে থেকে জুলাই, বছরের এই সময় পাট চাষের জন্য গবেষণা চলছে।
১৯৭১-৭২ সালে প্রতিহেক্টর জমিতে উৎপাদন হতো দেড় টন পাট। আর জাত উন্নয়ন হওয়ায় এখন উৎপাদন হচ্ছে দুই টন। উদ্ভাবন করা হয়েছে লবনাক্ততা সহনশীল জাত।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক আইয়ুব খান জানান, পার হেক্টরে তিন টন পর্যন্ত পাট চাষ করা সম্ভব, বর্তমানে সেই চেষ্টাই করছেন তারা।
বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য যাচ্ছে ১৩৫টি দেশে। পাট দিয়ে জার্মানিতে তৈরি হচ্ছে বিএমডব্লিউ গাড়ির ড্যাশবোর্ড। ২০২০-২১ অর্থবছরে এখাতের রপ্তানি আয় ১১৬ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি।
রাষ্ট্রায়ত্ব ২৫টি পাটকল এখন বন্ধ। পিপিপি বা জিটুজি ভিত্তিতে এসব পাটকল চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, ‘পৃথিবীর অন্য দেশ গুলোতে বাংলাদেশের পাটের চাহিদা অনেক বেড়েছে, এঅবস্থায় পাটজাত পণ্য উৎপাদন বাড়ানো গেলে অর্থনীতির ভিত অনেক মজবুত হবে।’
পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বি দেশ ভারত। এছাড়া চীন, উজবেকিস্তান, মিয়ানমার, জিম্বাবুয়ে, থাইল্যান্ড, মিশর-সহ আরো কয়েকটি দেশে পাটের চাষ হচ্ছে। তবে মানের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভালো পাট হয় বাংলাদেশে।
দেখুন ভিডিও :
এসবি/এসএ/