ইভ্যালি ইস্যুতে যা বললেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৪ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ শনিবার
দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদানের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এক টাকাও বেতন পাননি বলে প্রতিবেদন আসে সংবাদ মাধ্যমে। এরইমধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলায় ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এসব বিষয় নিয়ে শবনম ফারিয়া শনিবার সন্ধ্যায় বিবৃতি পাঠিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। তার দাবি, এসব সংবাদের তথ্য বিভ্রান্তিকর, এমনকি প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তার বক্তব্যও নেয়া হয়নি। ‘অপ্রয়োজনীয় আলোচনা’র অংশ হওয়ায় নিজের ভাগ্য নিয়েও আক্ষেপ করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে ফারিয়া বলেন, ‘দুদিন ধরে খেয়াল করছি, আমার সঙ্গে কথা না বলে কেউ কেউ বিভিন্ন রকমের সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করছে। সেসব খবরের শিরোনাম দেখে ভেতরের খবর না পড়ে মন্তব্য করতে কিছু মানুষের সম্ভবত খুব ভালো লাগে! যা সত্যি খুবই দুঃখজনক।
‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আমি অনুভব করি, গণমাধ্যমকর্মীদের কেন যেন আমার প্রতি বিশেষ ভালোবাসা আছে। তবে কয়েকজন কারণে অকারণে আমাকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশে বিশেষভাবে আগ্রহী থাকেন। সম্ভবত আমি সব সময় কল রিসিভ করতে পারি না, ভনিতা করি না, কাউকে তেলানোর ক্ষমতা আমার নেই এমন আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। তাই বেশির ভাগ সাংবাদিক ভাইদের প্রিয় তালিকায় আমার নাম একদম শেষের দিকে।’
ইভ্যালির সঙ্গে চাকরি-সম্পর্কের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “কিছু বিষয় এখন পরিষ্কার করার সময় এসেছে। আমি জুন-জুলাই এই দুই মাস একটি ‘ই-কমার্স সাইটে’ তাদের গণসংযোগ বিভাগে কাজ করেছি। আমি সেখানে যোগদানের ১৫ দিন পর থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি রিপোর্ট চলে আসায় তাদের কার্যক্রম অনেকটাই কমে এসেছিল। জুলাইয়ের পর আমার দাপ্তরিক কোনো কাজই ছিল না! তাই আগস্টে আমি চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে আসি।”
ফারিয়া বলেন, “অনেকেই জানতে চেয়েছেন, আমাকে দেখে কেউ অর্ডার করে থাকলে তাতে আমার মতামত কী? আমি যোগদানের পরের সপ্তাহ থেকেই ‘সাইক্লোন অফার’ বন্ধ হয়ে টি-টেন চালু হয়েছে। যেটি ছিল, যেখানে পণ্য পেলেই টাকা দেবে! সুতরাং আমাকে দেখে অর্ডার দিয়ে ফেঁসে যাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কেউ নিজেকে এসব বলে সান্ত্বনা দিলে কিংবা নিজ স্বার্থ হাসিলে শুধু হেনেস্তা করার জন্য আমাকে টানলে আমার সত্যিই কিছু বলার/করার নেই।”
নিজে কখনও প্রকাশ্যে কোথাও ইভ্যালিকে ‘প্রোমোট’ করেননি দাবি করে ফারিয়া বলেন, ‘কখনও বলিনি আপনারা বিশ্বাস রাখেন কিংবা আস্থা রাখেন। কারণ সেখানে দাপ্তরিক কাজের বাইরে আমার কোনো কিছু প্রচার প্রকাশের কোনো চুক্তি ছিল না। যেহেতু আমি পেশায় অভিনেত্রী সুতরাং আমাকে কোনো কোম্পানির প্রচারের কাজে অংশ নিলে আলাদা সম্মানি দিতে হয়। সেখানে সেই সুযোগ নেই।
‘আমি শুধু আমার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ১০০০ কোটি টাকার যে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল সেই সংবাদ শেয়ার করেছিলাম। যেটা সেদিন বাংলাদেশের ফেসবুক ইউজার মানুষের মধ্যে সম্ভবত অর্ধেক মানুষই শেয়ার করেছিল।’
ইভ্যালি ছাড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে না জানানোর ব্যাখ্যা দিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কারণ আমি অহেতুক আলোচনার অংশ হতে চাইনি। আরিফ আর হোসাইন ভাই যখন বললেন, তিনি আর এখানে কাজ করছেন না, তখনও আপনারা তাকে নিয়ে ট্রোল করলেন। চাকরি ছাড়লেও সমস্যা, কাজ করলেও সমস্যা! কোথায় যাব? অপ্রয়োজনীয় আলোচনার অংশ হতে ভালো লাগে না। কিন্তু আমার ভাগ্য এত খারাপ কেন, যেন আমারই সব সময় আলোচনা/সমালোচনায় পড়তে হয়।’
তিনি বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম লিখছে আমি নাকি অভিযোগ করেছি বেতন পাইনি! কাকে অভিযোগ করেছি? কখন অভিযোগ করেছি? কীভাবে করেছি? এই প্রমাণ কেউ দিচ্ছে না! আমার অভিযোগ থাকলে সেটা আমি প্রতিষ্ঠানটির এইচআর ডিপার্টমেন্টে করব। সাংবাদিক ভাইদের কেন করব? তারা কি আমাকে বেতন দেবে?
‘আমি যেই কোম্পানিতে কাজ করেছি তারা এখন একটা খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আশা করব তারা সব দায় পরিশোধ করে করে গ্রাহকদের পাশে থাকবে।’
আরকে//