নিউজপেপার অলিম্পিয়াডে লাব্বী আহসানের গল্প
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার | আপডেট: ১০:০৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২১ বুধবার
লাব্বী আহসান
ক্লাস ফাইভে পড়া অবস্থায় স্কুলের বড় ভাইদের মুখে গণিত অলিম্পিয়াডের নাম শোনেন। তখন থেকেই সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা শুরু। এরপর থেকে দেশের প্রায় সবরকম জাতীয় প্রতিযোগিতায় তার জন্য পুরস্কার একরকম নির্ধারিত থাকত।
মার্কস অলরাউন্ডার থেকে শুরু করে ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ এবং রচনা প্রতিযোগিতা থেকে জাতীয় স্পেস কার্নিভাল—সব প্রতিযোগিতায়ই পেয়েছেন পুরস্কার। আর এসব পুরস্কারই তাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। দেখিয়েছে নতুন কিছু সৃষ্টির স্বপ্ন। বলছিলাম লাব্বী আহসানের কথা।
ছোটবেলা থেকেই নিজে কিছু করার আগ্রহ সব সময় যাকে বিচলিত করত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক ধরনের অলিম্পিয়াড আছে, কিন্তু সংবাদপত্র নিয়ে কোনো অলিম্পিয়াড নেই। সেই ভাবনা থেকেই ২০১৮ সালে গড়ে তোলেন নিজের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান—নিউজপেপার অলিম্পিয়াড। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে নিউজপেপার অলিম্পিয়াডের যাত্রা শুরু হয়। পরিচিত এক প্রেস থেকে কিছু ফরম ছাপিয়ে আর ফেসবুকে অলিম্পিয়াডের একটা পেজ খুলে ঘোষণা দেওয়া হয়। মাত্র দু’দিনের মধ্যে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে। নিউজপেপার অলিম্পিয়াডের শুরুটা রংপুরে হলেও লাব্বীর স্বপ্ন ছিল দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া।
তবে এই অলিম্পিয়াড জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া অনেকটা অসম্ভবই ছিল এবং সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম চলছে প্রায় তিন বছর ধরে। তবে এ বিষয়ে অনেকরই ধারণা নেই। এমনকি ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর, বিভাগীয় সমন্বয়করা এই বিষয়ে জানতেনও না। তবু লাব্বী দমে যাননি। সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ছুটে চলেছেন নিজের স্বপ্নের পথে।
নিউজপেপার অলিম্পিয়াড বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠান; এটির উদ্বোধন হয়েছিল গাইবান্ধার পলাশবাড়ির মতো প্রত্যন্ত উপজেলায়। প্রথমবার ৩৯ জেলার প্রতিযোগিরা অংশ নেয়। দ্বিতীয়বারে ৬৪ জেলায় কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে। অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ৪ জুন ঢাকায় জাতীয় পত্রিকা অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হবে। তবে লাব্বীর স্বপ্ন আন্তর্জাতিক সিলেকশন রাউন্ড নিয়ে। ইতোমধ্যে ১২টি দেশ নিউজপেপার অলিম্পিয়াডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। জাপান এবং ভারতে সিলেকশন রাউন্ড শুরু হয়েছে।
এ বছরের শেষদিকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোনো অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক রাউন্ড আয়োজন করাই এখন মূল লক্ষ্য। এর পাশাপাশি লাব্বী আহসান প্রতিষ্ঠা করেছেন এনএনও লার্নিং হাব। যেখানে প্রতিদিন ১৫ হাজার মানুষ নতুন কিছু শিখছে। তিনি স্বপ্ন দেখেন, দেশের সকল মানুষ পত্রিকা পড়বে। পৃথিবীর সবখানে নিউজপেপার অলিম্পিয়াড পৌঁছে যাবে। তিনি সবসময় বিশ্বাস করেন— যে যাই বলুক, থেমে থাকা যাবে না। পথ চলতে গেলে হোঁচট তো খেতেই হবে। হোঁচট খেয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কারণ জীবনে সফলতার কোনো শেষ নেই।
এসি