জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২০ বাতিলের দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪৯ পিএম, ২ অক্টোবর ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৭:২৩ পিএম, ২ অক্টোবর ২০২১ শনিবার
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২০কে বিজ্ঞান শিক্ষা ও গণিত শিক্ষা সংকুচিত করার ও সাধারণ শিক্ষার ভেতরে কারিগরি শিক্ষাকে অনুপ্রবেশ ঘটানোর পায়তারা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। শনিবার (২ অক্টোবর) ৩ দফা দাবিতে একটি ছাত্র সমাবেশে এ কথা জানান নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী জয়ের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজীব কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক রুখসানা আফরোজ আশা, অর্থ সম্পাদক মুক্তা বাড়ৈ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুস্মিতা মরিয়ম, সংগঠক তাহমীদ হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।
তাঁরা বলেন, এই শিক্ষাক্রমে কিছু ভালো ভালো কথার আড়ালে শিক্ষা বৈষম্য, ব্যয় বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রের দায়িত্বের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে কৌশলে শিক্ষা ব্যবসাকেই উৎসাহিত ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থী যাতে একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সামগ্রিকতায় জ্ঞান লাভ করে- সেই কথা বলে প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত একই বিভাগে শিক্ষা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পূর্বে যেভাবে ৯ম শ্রেণীতেই বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা- এই ৩ বিভাগে ভাগ হয়ে যেত, এখন এটা চলে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে। তবে এতে বিজ্ঞান শিক্ষার পরিসর কমে এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বদলে সেখানে যুক্ত করা হয়েছে ভালো থাকা, ধর্ম শিক্ষা, জীবন ও জীবিকা- এ রকম নতুন কিছু বিষয়। ফলে বইয়ের বোঝা বাড়লেও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ার সম্ভবনা ক্ষীণ।
বক্তারা আরও বলেন, স্বল্প পরিসরে বিজ্ঞান পড়ে মাধ্যমিক শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে হঠাৎ বিজ্ঞান বিভাগের পরিসর বেড়ে গেলে শিক্ষার্থীরা চাপের মুখে পড়বে। সরকারের পরিকল্পনার ফলে এমনিতেই বিজ্ঞান পড়ায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এরপর আবার এই নতুন চাপ এড়াতে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিভাগ নিতে আরও বেশি নিরুৎসাহিত হবে। একই ধারার শিক্ষার নামে সবকিছু থেকে এক চিমটি এক চিমটি করে নিয়ে জগাখিচুড়ি পাকানো হচ্ছে। কিন্তু একই ধারার শিক্ষা আর জগাখিচুড়ি শিক্ষা এক কথা নয়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আলাদা করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থাকা সত্ত্বেও প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমে কারিগরি শিক্ষার দিকে অত্যাধিক জোর দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মানে কেবলমাত্র শুধু কিছু কারিগরি দক্ষতা বোঝায় না। দক্ষতা অর্জন করলেই কেবল একজন মানুষকে শিক্ষিত বলা যায় না।
নেতৃবৃন্দ এসময় ছাত্র ও শিক্ষা স্বার্থ বিরোধী এই শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষানীতি ও পাঠক্রম প্রণয়নের জোর দাবী জানান।
বারবার ছাত্রসমাজকে গিনিপিগের মত ব্যবহার করার অতীত তিক্ত অভিজ্ঞতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে জাতীয় মতামত গড়ে তোলার আহ্বান জানান ছাত্রফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ।
এনএস//