ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

বিশ্ব প্রাণী দিবস : হুমকির মুখে ডলফিন ও তিমি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২১ সোমবার

কুয়াকাটা, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন নদীতে একের পর এক ভেসে আসছে মৃত ডলফিন ও তিমি। জেলেদের জালেও আটকা পড়ছে নানা প্রাণী, বিশেষত বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন ও তিমি। কিন্তু মৃত প্রাণী সংরক্ষণ, ময়নাতদন্ত কিংবা গবেষণার কোনো উদ্যোগ না নিয়েই এগুলো তড়িঘড়ি করে মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছে। এতে অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে প্রাণীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।

এরই মধ্যে প্রাণীদের অধিকার নিশ্চিতে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে- ‘প্রাণী দিবস’। প্রাণীদের কল্যাণে এবং তাদের অধিকার রক্ষার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় দিবসটি। সারাবিশ্বে দিবসটি পালন করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘ন্যাচার ওয়াচ ফাউন্ডেশন’।

সর্বপ্রথম হেনরিক জিম্মারমেন নামে এক জার্মান লেখক ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ জার্মানির বার্লিনে দিবসটি পালন করেন। পরে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে ৪ অক্টোবরকে বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এছাড়াও দেশে দেশে প্রাণী কল্যাণমূলক সংস্থা দিবসটি পালন করে থাকে। প্রাণীদের প্রতি মানুষের সদয় হতে এবং পৃথিবীতে তাদের গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরতেই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।

নিউইয়র্কভিত্তিক ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৬৭টি ডলফিন ও তিমি মারা গেছে। এর মধ্য ৬১টি ডলফিন ও ছয়টি তিমি। চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০টি, বরিশাল বিভাগে ১২টি, খুলনায় ১০টি, ঢাকায় তিনটি এবং ময়মনসিংহ ও রাজশাহীতে একটি করে ডলফিন ও তিমি মারা গেছে। এগুলোর ৮৩ শতাংশ জালে আটকা পড়ে এবং ১৭ শতাংশ ট্রলার ও জাহাজের সঙ্গে আঘাত লেগে মারা গেছে। জালের মধ্যে ৭৮ শতাংশই মারা গেছে ফাঁস জালে আটকা পড়ে। 

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুয়াকাটা সৈকতে ১৬টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। এ অবস্থায় সোমবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রাণী দিবস। বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করবে দিবসটি।

ডব্লিউসিএসের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডলফিন ও তিমির মৃত্যুর কারণ জানতে একটি গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ সেল তৈরি করা উচিত। বন অধিদপ্তরের ফরেনসিক ল্যাবরেটরি আছে। সেখানে মৃত্যুর কারণ জানতে ডলফিন ও তিমির জৈব নমুনা বা টিস্যু নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। প্রাণী মারা গেলেই প্রাথমিকভাবে লোক পাঠিয়ে তার গায়ে কোনো ক্ষতচিহ্ন আছে কিনা, তা দেখা উচিত।

মৃত ডলফিন ও তিমি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশ থেকে তিমি ও ডলফিন বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বিলুপ্তির হাত থেকে তিমি-ডলফিন রক্ষায় ময়নাতদন্ত ও গবেষণা বাড়াতে হবে। মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করে তা দূর করতে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি, বিজ্ঞানী, রাজনীতিক ও জনগণকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসএ/