প্যানডোরা পেপার্স কী?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৪৭ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০৩:৪০ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২১ সোমবার
বিশ্বজুড়ে ৩৫ জন রাষ্ট্র নেতা, কয়েকশ সরকারি ও সেনা কর্মকর্তা, ধনকুবেরের গোপন সম্পদ ও লেনদেন ফাঁস করে দেওয়া ‘প্যান্ডোরা পেপার্স’ এর দিকে এখন সবার চোখ।
কী এই প্যানডোরা?
প্যানডোরা শব্দের আভিধানিক অর্থ শামুক শ্রেণির এক ধরনের প্রাণী যার খোলস অনেকটাই ভঙ্গুর। যে কারণে হালকা চাপেই তা ভেঙে যেতে পারে এবং ভেতরের জিনিস বের হয়ে যেতে পারে। এর সাথে মিলিয়েই মূলত এবারের গোপন তথ্য ফাঁসের ঘটনাটির নাম দেয়া হয়েছে প্যানডোরা বাক্স। এই বাক্সের ঢাকনা খুলতেই একে একে বেরিয়ে আসছে বিশ্বনেতাদের গোপন আর্থিক লেনদেনের তথ্য।
এরইমধ্যে এই বাক্স থেকে বেরিয়েছে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের দুর্নীতির খবর।
বাদ যাননি তারকারাও। নাম এসেছে ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকারেরও।
এর আগে ফিনসেন ফাইলস, প্যারাডাইস পেপারর্স, পানামা পেপারর্স এবং লাক্সলিকস নামেও বিভিন্ন নথি ফাঁস হয়েছে। তবে এবারের পানডোরা বাক্সের মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানা গেছে।
মূলত বিশ্বের নামী-দামী বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের গোপন তথ্যই উঠে এসছে প্যানডোরা পেপার্সের মধ্য দিয়ে, আর এর বেশিরভাগই অবৈধ আর্থিক লেনদেন এবং কর ফাঁকি দেয়া বিষয়ক।
প্যানডোরায় মোট এক কোটি ২০ লাখ গোপন নথি, ৩০ লাখ ছবি ফাঁস হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের হাতে এই নথি আসলে তা পর্যালোচনা করেন দেশের ১১৭টি দেশের সাড়ে ছয়শর বেশি সাংবাদিক। সেখান থেকেই উঠে আসা তথ্য গুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে তারা।
প্যানডোরা বাক্সের তালিকায় আসা ব্যক্তিরা মূলত তাদের অবৈধ আর্থিক লেনদেন করেছেন বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে। এ ধরনের ৯৫টি কোম্পানির নাম এসেছে তালিকায়।
অফশোর কোম্পানি কি?
এই কোম্পানিগুলোর জটিল নেটওয়ার্ক বিশ্বজুড়ে। তারা মূলত বিশ্বের নামী ব্যক্তিত্বদের সম্পদ তাদের মালিকানায় কেনে এবং প্রকৃত ক্রেতার পরিচয় গোপন রাখে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অবৈধ টাকায় কেউ সম্পত্তি কিনতে চাইলে সেটা যদি অন্য দেশে অবস্থিত অফশোর কোম্পানির চেইনের মাধ্যমে কেনে তাহলে পরিচয়ও গোপন থাকবে। একইসাথে কর কমবে, কিছু ক্ষেত্রে কর মওকুফও হবে।
কোন দেশ কিংবা অঞ্চলে অফশোর কোম্পানির বিস্তার বেশি হবে তার নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। কিন্তু সাধারণত যুক্তরাজ্যের কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ, ভার্জিন দীপপুঞ্জ, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের মত অঞ্চলগুলোতে এর কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য।
এই অফশোর কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির কত টাকা গোপন রেখেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে ফাঁস হওয়া নথি থেকে ধারণা করা হচ্ছে এর সংখ্যা প্রায় ৩২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আন্তর্জাতিক মূদ্রা তহবিল আইএমএফ বলছে, এই সব গোপন লেনেদেনের কারণে বিশ্বব্যাপী ছয়শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কর হারাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার।
সূত্র: বিবিসি
এসবি