দেবীর বোধন, জানুন এর নিয়ম ও তাৎপর্য
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২১ সোমবার | আপডেট: ১২:৫০ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২১ সোমবার
রাবণের সঙ্গে যুদ্ধের আগে দুর্গার বোধন করেছিলেন দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। এরপর দুর্গার আরাধনা করে শক্তি ও সৌভাগ্যের প্রার্থনা করেন তিনি। দেবীপক্ষে ষষ্ঠীতে দুর্গাকে বোধন করে পূজা করেন রাম।
দেবী আসবেন, গেল ক’দিন ধরেই তাই শরতের আকাশ ছিল দীপ্তিময় আভায় পরিপূর্ণ। জগজ্জননী দুর্গার আগমনী প্রভায় মেতেছে দেশ, বিমোহিত বিশ্ব।
সোমবার ষষ্ঠী। দেবী দুর্গাকে বোধনের দিন। এই দুর্গার বোধন ঘিরে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি। যা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না।
এবার জেনে নিন কী ভাবে মহাষষ্ঠী পালিত হয়—
এই শব্দটির অর্থ জাগ্রত করা। মর্ত্যে দুর্গার আবাহনের জন্য বোধনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। এ দিন কল্পারম্ভ দিয়ে শুরু হয় দুর্গার বোধন। ষষ্ঠীর সকালেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তারপর দশভূজার সামনে প্রার্থনা করা হয় যে, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত গোটা পূজা পর্বে যেন কোনও বিঘ্ন না ঘটে। এরপর ঘট ও জলে পূর্ণ একটি তামার পাত্র মণ্ডপের কোণে স্থাপন করা হয়। এই স্থানেই দুর্গা ও চণ্ডীর পূজা করা হয়। এরপর হয়, দুর্গার বোধন। তারপর অধিবাস, আমন্ত্রণের পর্ব। বোধনের পর বিল্ব শাখার দেবীকে আহ্বান জানানো হয়। অশুভ শক্তি দূরের জন্য ঘটের চারপাশে তীরকাঠিতে সুতা জড়িয়ে আমন্ত্রণ প্রক্রিয়া শুর হয়। এ ভাবেই শেষ হয় মহাষষ্ঠীর আচার।
বোধনের তাৎপর্য
এই আচারের একটি পৌরাণিক তাৎপর্য রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী এ দিনই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে পদার্পণ করেন দেবী দুর্গা। সঙ্গে থাকেন তাঁর চার সন্তান লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী। এদিন দুর্গার মুখের আবরণ উন্মোচিত হয়। মনে করা হয়, বোধনের পর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই বোধন আবার অকাল বোধন হিসেবে খ্যাত। হিন্দু শাস্ত্র মতে সূর্যের উত্তরায়ন দেবতাদের সকাল। উত্তরায়নের ছয় মাসকে দেবতাদের এক দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। সকালে সমস্ত দেব-দেবীর পূজা করা হয়। আবার দক্ষিণায়ন শুরু হলে ছয় মাসের জন্য নিদ্রা যান সমস্ত দেব-দেবী। এই দক্ষিণায়ন দেবতাদের রাত। রাতে দেব-দেবীর পূজা করা হয় না। কিন্তু দক্ষিণায়নের ছয় মাসের মধ্যেই দুর্গাপূজা হয় বলে বোধনের মাধ্যমে আগে দেবী দুর্গাকে ঘুম থেকে তোলা হয়। পুরাণে এর সঙ্গে একটি কাহিনীও জড়িত। রাবণের সঙ্গে যুদ্ধের আগে দুর্গার বোধন করেছিলেন দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। এরপর দুর্গার আরাধনা করে শক্তি ও সৌভাগ্যের প্রার্থনা করেন তিনি। অকালে দুর্গাকে জাগিয়ে তোলা হয়েছিল বলেই একে অকাল বোধন বলা হয়ে থাকে।
সূত্র : হিন্দুস্তন টাইমস
এসএ/