নড়াইলে পশুহাটের বেহালদশা, কমছে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:১৯ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার
নড়াইলের ঐহিত্যবাহী নাকসী পশুহাটটির দীর্ঘদিন ধরে বেহালদশা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত হাটটি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে নির্মিত দুইচালা বিশিষ্ট টিনশেডের ঘরটি তিন বছরেও শেষ হয়নি। হাটে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই বললেই চলে। কাঁদামাটি, জলাবদ্ধতা, কাঁচা ও ভাঙ্গা রাস্তার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা সমাগম।
অথচ উপজেলা প্রশাসন থেকে হাট ইজারা দিয়ে বিপুল সংখ্যক টাকা আয় করে থাকে। চলতি অর্থবছরেও ৩৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় হাটটি কিনেছেন ইজারাদার হাদিউজ্জামান।
প্রায় ৬০ শতক জমির ওপর পশুহাটটি। এর ৪০ শতাংশে কাঁচাবাজারসহ দোকানপাট রয়েছে। প্রতি মঙ্গলবারে এখানে গরু-ছাগলসহ বিক্রিযোগ্য অন্যান্য পশু এবং কাঁচামালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের হাট বসে।
হাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, নড়াইল শহর সংলগ্ন নাকসী পশুহাটটি প্রায় ৩০ বছরের ঐহিত্য বহন করছে। শহরের কাছাকাছি এবং নড়াইল-যশোর সড়কের কোল ঘেঁষে অবস্থিত হাটটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় বিগত সময়ে এখানে প্রচুর ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ছিল। নড়াইল জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পাশের জেলা যশোর, খুলনা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন।
ব্যবসায়ী সুলতান খান বলেন, পশুহাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য টিনশেডের দুইচালা বিশিষ্ট ঘরটি তিন বছর আগে নির্মাণ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। আর কাঁচাবাজারের ঘরগুলোর অবস্থাও করুণ। দীর্ঘদিন ধরে পশুহাটের বেহালদশা থাকায় অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা সড়কের পাশে অবস্থান করেন। পশুবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন সড়কের পাশে পার্কিং করে। তাতে জীবনের ঝুঁকিসহ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
হাট ব্যবসায়ী মফিজ সিকদার বলেন, ৩০ বছরের ঐহিত্যবাহী নাকসী হাটটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ইজারাদার হাদিউজ্জামান বলেন, পশুহাটটি প্রায় ৬০ শতক জমির ওপর অবস্থিত হলেও কাঁদামাটি, জলাবদ্ধতা ও ভাঙ্গাচেরা গলির কারণে বর্তমানে এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করা যাচ্ছে। ফলে গরু-ছাগলসহ অন্যান্য বিক্রিযোগ্য পশু বেচাকেনায় সমস্যা হচ্ছে। পশুহাটের সীমানা প্রাচীরও জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, নড়াইলের ঐহিত্যবাহী হাট নাকসী। বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে ব্যবসায়ীরা আসেন। কোরবানির সময় পশুহাটে আরও লোকসমাগম হয়। এই হাটের ঐহিত্য ধরে রাখতে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে। আশা করছি, মাসখানেকের মধ্যে হাটের বেহাল অবস্থা দূর হবে।
এএইচ/