জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় ১০০ বিলিয়ন ডলার দিবে এডিবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩০ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২১ বুধবার
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর (ডিএমসি) জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
এডিবি’র প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়া বলেন, ‘এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে জলবায়ুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে হয় বিজয় নয়তো পরাজয় ঘটবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু সঙ্কট দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তাই, অনেকেই জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধি করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে জলবায়ু অর্থায়ন ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
২০১৮ সালে এডিবি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে যে, তাদের কর্মসূচির মোট সংখ্যার অন্তত ৭৫% জলবায়ু পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের নিজস্ব জলবায়ু অর্থায়ন অন্তত ৮০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের ঘোষণা অনুযায়ী এই অর্থায়ন বৃদ্ধি পাবে।
এডিবি ২০১৯-২০২১ অর্থবছরে নিজস্ব সম্পদ থেকে মোট জলবায়ু অর্থায়ন প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করছে। জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধির পরিকল্পনা হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে এডিবি’র প্রচেষ্টার একটি প্রধান উপায়।
বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারি (কোভিড-১৯) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের আন্তঃসম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অনেক উন্নয়নশীল দেশ সবুজ, সহিষ্ণু ও অন্তঃর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার ব্যবস্থার জন্য নানা ধরনের দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এছাড়া, পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্রে জলবায়ু কর্মসূচিতে সহায়তা দেয়ার জন্য অতিরিক্ত ২০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হচ্ছে।
প্রথমত: জলবায়ু প্রভাব প্রশমনের নতুন উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বালানী মজুদ, জ্বালানী দক্ষতা ও কম-কার্বন নিঃসরণ। এডিবি আশা করছে যে, জলবায়ু প্রভাব প্রশমন অর্থায়ন ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে।
দ্বিতীয়ত: রূপান্তরমূলক অভিযোজন প্রকল্প বৃদ্ধি করা। গ্রামীণ, কৃষি ও পানির মতো জলবায়ু-স্পর্শকাতর প্রকল্পগুলোকে কার্যকর জলবায়ু অভিযোজন ও অধিক সহনশীল করার প্রাথমিক লক্ষ্যে নিয়ে প্রণয়ন করা হবে। এডিবি তাদের মোট অভিযোজন অর্থায়ন ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করছে।
তৃতীয়ত: এডিবি’র বেসরকারি খাতের কর্মসূচিগুলোতে জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধি করা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এডিবি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্যই বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক আরো প্রকল্প তৈরি করা।
চতুর্থত: আসিয়ান ক্যাটালিকটিক গ্রীন ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি এবং গ্রীন রিকভারি প্লাটফরম এর মতো নতুন অর্থায়ন প্লাটফরমগুলোর মাধ্যমে সহ সবুজ, সহিষ্ণু কর্মসূচি এবং কোভিড-১৯ থেকে অন্তর্ভূক্তিমূলক উত্তরণের জন্য সহায়তা। উল্লেখ্য, এসব প্লাটফরম কম কার্বন নি:সরণকারী অবকাঠামোর জন্য পুঁজি বাজার এবং বেসরকারী খাতের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থায়ন লাভের আশা করছে।
পঞ্চমত: জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ও অধিক জলবায়ু সহিষ্ণুতা এবং জলবায়ু প্রভাব প্রশমনের জন্য নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা-ভিত্তিক ঋণদানের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সংস্কার কর্মসূচিগুলোকে এগিয়ে নিতে সহায়তা দেয়া।
এই ক্ষেত্রগুলোতে এডিবি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য নতুন, জলবায়ু-কেন্দ্রীক প্রযুক্তি ও বেসরকারি মূলধন লাভের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রয়াস অব্যহত রাখবে।-বাসস
কেআই//