ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৬ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১ রবিবার | আপডেট: ১১:৫৬ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১ রবিবার

ওমান একাদশের বিপক্ষে দারুণ খেলার পর দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হতাশাজনক পারফরম্যান্স করে টাইগাররা। তবে সেই হতাশাকে পেছনে ফেলে রোববার ওমানের মাস্কাটে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনটা জয় দিয়েই শুরু করতে চায় টিম বাংলাদেশ।

এদিন মাস্কাটের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স চ্যানেল।

আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ ‘বি’তে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে স্কটল্যান্ড ছাড়াও থাকছে স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। এদিনই বিকাল ৪টায় বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে শেষের দল দুটি। 

অন্যদিকে, ‘এ’ গ্রুপে শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে আয়ারল্যান্ড, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জনে লড়াই করবে এই ৮টি দল। ১৭ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত এই পর্বে একে অপরের বিপক্ষে একবার করে মুখোমুখি হবে দলগুলো। পয়েন্ট টেবিলের সেরা দু’দল পরের রাউন্ডে খেলবে।

টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে গ্রুপ পর্বে অবশ্য সেরা হবার দৌঁড়ে ফেভারিট বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। শক্তি ও ক্রিকেট ঐতিহ্যের কারণে স্কটল্যান্ড প্রথম রাউন্ডের ‘বি’ গ্রুপে বাাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ। নেদারল্যান্ডস ও নামিবিয়ার বিপক্ষে দু’টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসী স্কটিশরা।

২০১২ সালে নেদারল্যান্ডসের মাটিতে এই ফরম্যাটে মাত্র একবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিলো স্কটল্যান্ড। সেই ম্যাচে ৫৮ বলে ১০০ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে স্কটিশদের জয়ের স্বাদ দেন রিচি বেরিংটন। এখনও স্কটল্যান্ড দলের প্রধান খেলোয়াড় তিনি।

অন্যদিকে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে সাত জয়ের স্বাদ নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়েই বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় করেই দেশ ছাড়ে টিম বাংলাদেশ। বিশ্বের এই দুই পরাশক্তিকে হারানোর আগে জিম্বাবুয়ের মাটিতেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে ফেরে টাইগাররা। 

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়ে স্বভাবতই বাংলাদেশ দল মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে বলেই মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যার প্রতিফলনও দেখা যায় ওমানের মাঠেই।

আনঅফিসিয়াল ম্যাচে ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে দুই শতাধিক রানের স্কোর দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আইসিসির অফিসিয়াল দু’টি ম্যাচে হার চিন্তায় ফেলেছে বাংলাদেশকে। বিশেষ করে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হারটিই প্রশ্নবিদ্ধ করে গোটা টিমকে।

শ্রীলংকার কাছে ৪ উইকেটে হারলেও ১৭৭ করা আয়ারল্যান্ডের কাছে ৩৩ রানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের সুযোগ ছিলো টাইগারদের। তবে আইরিশদের বিপক্ষে ১৭৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে টাইগাররা। ৭ উইকেটে ১৪৪ রান পর্যন্ত করতে পারে লিটন দাসের দল।

আইরিশদের কাছে এমন হার শুধু হতাশাজনকই নয়। মনে করা হচ্ছে, বড় ধরনের মানসিক চাপে ফেলেছে টিম বাংলাদেশকে। সৌম্য সরকার এবং নুরুল হাসান সোহান ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই তাদের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেনি। বোলারদের মধ্যে ভালো করেছেন এক তাসকিন আহমেদ। প্রতিপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন তিনি। হতাশ করেন আরেক পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। কাটার ও স্লোয়ার দিয়েও তেমন সুবিধা করতে পারেননি আইপিএলে স্বরূপে ফেরা এই বাঁহাতি পেসার। নিতান্তই সাধারণ মানের বোলার মনে হয়েছে ফিজকে।

তবে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের যোগদানে দলের শক্তি বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে। পিঠের ইনজুরিতে ভুগছেন মাহমুদুল্লাহ। আইপিএলে কোলকাতার হয়ে খেলার কারণে দলের সঙ্গে শুরু থেকে থাকতে পারেননি সাকিব। ইতোমধ্যেই আইপিএল শেষ করে ওমানে জাতীয় দলের জৈব-সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করেছেন টাইগার অলরাউন্ডার। আইপিএলের ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে অবশ্য কিছুটা হতাশ এই তারকা।

এদিকে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও আশানুরুপ ফল নেই বাংলাদেশের। ১১৩ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৪১ ম্যাচ জিতেছে এবং হেরেছে ৭০ ম্যাচে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

আর ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২৫টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা, যার মধ্যে জিতেছে মাত্র পাঁচটিতে। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই এসেছে চারটি জয়। বলার মতো জয় বলতে বাছাই পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচে জয়। তবে এবার নতুন ইতিহাস লিখতেই আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছেন রিয়াদ বাহিনী।

বাংলাদেশ দল: 
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসাইন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসাইন পাটোয়ারী, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, রুবেল হোসাইন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ।

এনএস/এএইচ/