শেষ বিশ্বকাপে ভালো কিছু দিতে চান শোয়েব
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৫৫ এএম, ১৯ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৫৫ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার
১৯৯৯ সালে যখন শোয়েব মালিকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তখন জন্মই হয়নি তার বর্তমান সতীর্থ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ও ব্যাটসম্যান হায়দার আলীর। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান দলের সহ-অধিনায়ক শাদাব খানের বয়স তখন এক বছর। আর অধিনায়ক বাবর আজম ও অল রাউন্ডার হাসান আলি তখন ৫ বছরে পা রেখেছেন। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে শারজায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে মালিকে অভিষেকের সময় পাকিস্তান দলের নেতৃত্বে ছিলেন কিংবদন্তী ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম। যিনি অবসর নিয়েছেন ১৮ বছর আগে। তারপরও এখনো লড়াই করার মতো ফিটনেস ধরে রেখেছেন মালিক।
তাইতো পাকিস্তানের হয়ে টি-২০ বিশ্বকাপে খেলতে নামার সময় নিজের বয়সের অনুভুতি ভুলে যাবেন ৩৯ বছর বয়সি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক।
এ নিয়ে ওয়াসিম আকরাম এএফপিকে বলেন, ‘১৯৯৯ সালে মালিকের অভিষেক আমার এখনো মনে আছে। তার বয়স তখন ১৭ কি ১৮ বছর। আমিই তাকে তুলে এনেছিলাম এবং ধীরে ধীরে সে বোলার হয়ে উঠতে থাকে। সেই সঙ্গে একজন ফিল্ডার। তবে কখনো জানতাম না সে ভাল ব্যাট করতে পারে।’
তারপরও বিশ্বকাপের সবচেয়ে বয়সী খেলোয়াড় নন মালিক। তার একমাস আগে ওয়ানডে অভিষিক্ত ৪২ বছর বয়সি ক্রিস গেইল এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিরোপা অক্ষুন্ন রাখার মিশনে।
ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘সিমিত ওভারের ক্রিকেটে মালিক হয়ে উঠেছেন জীবন রক্ষাকারী হিসেবে। এমনকি এখনো যদি ফিটনেসের কথা তোলেন, তাহলে তার অবস্থা চমৎকার। অনুশীলনও করেন গভীরভাবে। আমার মতে তরুণ ক্রিকেটাররা তাকে রোল মডেল হিসেবে বেছে নিতে পারে। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটে সে এখনো তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এতেই প্রমানীত হয় মানষিক ভাবে সে কতটা শক্তিশালী। তাকে দেখে বেশ ভালই মনে হচ্ছে, আর এটিই প্রমান করছে সে আরো উচ্চতায় পৌঁছাতে চায়।’
সাবেক সতীর্থ ও অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদির বিশ্বাস পাকিস্তানের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের চেস্টায় মালিক ভুমিকা রাখতে পারবেন। সাবেক এই অল রাউন্ডার বলেন, ‘টি-২০ বিশ্বকাপে শোয়েব মালিকের ডাক পাওয়া দেখে ভাল লাগছে। অভিজ্ঞ ও সিনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি পাকিস্তানকে বড় অর্জনে সহায়তা করতে পারবেন।’
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম মনে করেন, আরব আমিরাতে মাঠে ও মাঠের বাইরে মালিক গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘তার অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সম্পদ। তিনি এখনো স্কোয়াডের সেরা ফিট খেলোয়াড়দের একজন। সেরা একাদশে তাকে যুক্ত করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।’
ক্যারিয়ারের নানা উত্থান পতন পেরুনো মালিক ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন ফাইনালে। ২০০৯ সালে শিরোপা জয়ী পাকিস্তান স্কোয়াডেরও সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১০ সালের আসরে খেলতে না পারলেও সর্বশেষ তিনটি আসরেই পাকিস্তান দলের অংশ ছিলেন শোয়েব মালিক।
এ বছরের টুর্নামেন্টে মালিককে অন্তর্ভুক্ত করতে ভক্তদের আহ্বান সত্ত্বেও গতমাস পর্যন্ত স্কোয়াডের ধারে কাছেই ছিলেন না মালিক।
সদ্য শেষ হওয়া ঘরোয়া টি-২০ ক্রিকেটে সাত ম্যাচে ব্যাট হাতে ২২৫ রান করলে তার দলভুক্তির বিষয়টি আরো জোড়ালো হয়। তবে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শোয়েব মাকসুদ পিঠের ব্যাথার কারণে বাদ পড়ার পর শেষ মুহুর্তে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পান মালিক।
২০১৫ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া মালিক ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে চরমভাবে ব্যর্থ হবার পর। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপে খেলবেন না বলে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন মালিক।
তিনি বলেন, ‘আমি এবারের বিশ্বকাপ খেলতে চাই এবং ভাল অবস্থায় থেকে চলে যেতে চাই।’
আগামী রোববার দুবাইয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে পাকিস্তান।
এসএ/