‘আমরাও চাই বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হোক’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার
‘আমাদের দেশে পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। বিশেষ করে রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান রাখার বিধান সংশোধনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কাজ করবে’ বলে জানিয়েছেন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ আয়োজনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ১৯ অক্টোবর ‘রেস্তোরাঁয় ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্তিকরণে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ধূমপান স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করে। এছাড়া অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির শিকার হন। যথাযথ সচেতনতাই পারে সকলের মধ্যে ধূমপানের ক্ষতির বিষয়টি তুলে আনতে। আর তাই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্টের সঙ্গে আমরাও একমত পোষণ করে কাজ করছি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি ড. এস এম খলিলুর রহমান এবং ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের হেড অব প্রোগ্রামস-বাংলাদেশ মো. শফিকুল ইসলাম। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়ক মো. শরিফুল ইসলাম।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, অসংক্রামক অনেক রোগের জন্য তামাক দায়ী। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার স্বপ্ন পূরণ করতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন সচেষ্ট। এজন্য আমরা রেস্তোরাঁ ওনার্স এসোসিয়েশনের সঙ্গে মিলে দেশের ২৪টি জেলার রেস্তোরাঁগুলোকে ধূমপানমুক্ত করার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। তারকা হোটেলগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সহযোগিতার মনোভাব দেখিয়ে তাদের হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে। তবে মধ্যম মানের রেস্তোরাঁগুলোকে এখনো ধূমপানমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ তারা যাতে রেস্তোরাঁগুলোকে
পুরোপুরি ধূমপানমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ধাপে ধাপে আমাদেরকে নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে আইন সংশোধন অন্যতম। এ লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ৭ সংশোধন করে সব ধরনের পাবলিক প্লেসে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা এবং ধূমপানসহ যেকোন ধরনের তামাক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত।
ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যিনি ধূমপান করেন না তার অধিকার আছে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য। অথচ পরোক্ষ ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যাই বেশি। যেহেতু ধূমপানের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সেজন্য সব ধরনের পাবলিক প্লেস সহ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা উচিত।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার অধিকার অধূমপায়ীর আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে আমরাও চাই দেশকে তামাকমুক্ত করতে। আমরাও চাই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় রেস্তোরাঁসহ সর্বত্র ধূমপান বন্ধ করতে। রেস্তোরাঁয় ‘ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান’ রাখার ফলে এটি পরোক্ষ ধূমপানের জন্য কতটুকু ক্ষতি করে সেটিও আমরা বিবেচনায় রাখবো। তবে এসব কাজ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই সম্ভব দেশকে তামাকমুক্ত করা।
কেআই//