ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

চারিদিকে সমুদ্র অথচ খাবার পানি নেই যে দ্বীপে 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৭ এএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৮:৫৮ এএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার

কোনও হ্রদ নেই, নদী নেই, না রয়েছে কোনও ঝরনা। এক কথায় শুদ্ধ পানির কোনও উৎস নেই। তারপরেও কীভাবে টিকে আছেন আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে জেগে থাকা দ্বীপ বারমুডার মানুষ? শুধু তাই নয়, পর্যটন কেন্দ্র হিসাবেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে দ্বীপটি। এ যেন পানির সঙ্গে লড়াইয়ের এক গল্প।  

মাত্র ৫৩ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত দ্বীপটিতে ৬৪ হাজার মানুষের বাস। রয়েছে পর্যটকের আনাগোনা। 

চারিদিকে সমুদ্র অথচ সুপেয় পানির উৎস নেই। তারপরেও দ্বীপের মানুষের জীবন কেটে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। এ জন্য শুধু হতে হয়েছে একটু কৌশলী আর সচেতন। 

এই দ্বীপের বাসিন্দারা মূলত বৃষ্টির পানি জমিয়ে, সেটিই ব্যবহার করেন সারাবছর। 

কিন্তু বৃষ্টির পানি কতটা পাওয়া যাবে তা তো নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপরে। এ জন্য পানির অপচয় রোধের ব্যবস্থা করেছেন তারা।

এখানকার শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দেওয়া হয়, কীভাবে অল্প পানি ব্যবহারে চলা সম্ভব। কীভাবে পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব। 

যে কারণে এখন পুরো পশ্চিমা বিশ্বেই পানি বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন বারমুডার মানুষ। 

এই দ্বীপের প্রতিটি বাড়ির ছাদ তৈরি হয় সাদা রঙের চুনাপাথরে। আর চারিদিকে ঢালে থাকে খাঁজকাটা নকশা। যা বেয়ে বৃষ্টির পানি নিচের দিকে গড়িয়ে আসে। তারপর পাইপ দিয়ে ভূগর্ভের জলাধারে প্রবেশ করে। 

এই পানি সঞ্চয়ের জন্য প্রতিটি ঘরের নীচেই ১০০ গ্যালনের জলাধার থাকা বাধ্যতামূলক। দ্বীপের নীতিমালাতেও বাড়ি তৈরির নকশার এই বাধ্যবাধকতার উল্লেখ আছে। 

যে কারণে বারমুডার প্রতিটি বাড়ির নকশা হুবহু এক। দুইশ বছর আগের নির্মাণ করা বাড়িটি যেমন, হাল আমলে তৈরি বাড়িটিও দেখতে ঠিক তেমনই। 

এত চেষ্টার পরও অনেক সময় খাবার পানির সঙ্কটে ভুগতে হয় দ্বীপের বাসিন্দাদের। 

বিশেষ করে ২০ শতকে যখন বারমুডার পর্যটন শিল্প ফুলেফেঁপে ওঠে তখন বিশুদ্ধ পানির চরম সঙ্কট তৈরি হয়েছিল।

তা কাটাতে ওই সময়ই দ্বীপের প্রথম ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হয়। যাতে সমুদ্রের নোনা পানি পরিশ্রুত করে তা পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা যায়।

সরকারিভাবে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলেও সুন্দর অভ্যাসটি ত্যাগ করেননি বারমুডাবাসী। তারা এখনও বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে এবং সচেতনভাবে তা ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন।  

তাদের মতে, জীবন বাঁচাতে পানির জন্য দীর্ঘদিন ধরে যে লড়াই করে যাচ্ছেন, সরকারি পানি ব্যবহার করে সেই লড়াইয়ে তারা হার মানতে চান না। 

সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

এসবি/