ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

জরিমানা করেও পাহাড়ে মাটি কাটা থামানো যাচ্ছে না

চট্টগ্রাম (বাঁশখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:৩৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার

বাঁশখালীর নাপোড়া শামশুইয়া ঘোনা এলাকায় সমতল থেকে ৩৫ ফুট উঁচু রইস্যা পাহাড়। ওই পাহাড়ে স্কেভেটর বসিয়ে কতিপয় যুবক দেদারচ্ছে কাটছে পাহাড়ের লাল মাটি। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদেরকে জরিমানা করার পর তারা আরও জোরেসোরে পাহাড় কাটা শুরু করে দিয়েছে।

ভয়াবহ আকারে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে গ্রামবাসী অভিযোগ দেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ওই অভিযোগ পেয়ে গত রোববার (২৪ অক্টোবর) বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী এবং উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান।

ওই সময় তারা স্কেভেটর ও ট্রাক জব্দ করেন এবং পাহাড় কাটায় জড়িত নুরুল আবছার, নুরুল আমিন, মো. দিদার, সাদ্দামসহ ৪ জনকে আটক করেন। পরে তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আটককৃতদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা দিয়ে মুক্ত হয়ে পাহাড়খেকোরা গতকাল সোমবার সকাল থেকে আবার ৩৫টি ট্রাক দিয়ে জোরেসোরে পাহাড় কাটা শুরু করেছে।

সোমবার দুপুর ১২টায় সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশখালী প্রধান সড়কের নাপোড়া শামশুইয়া ঘোনা সড়কে ট্রাকের লাইন। প্রতিটি গাড়িতে পাহাড়ি মাটি। প্রায় দুই কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তায় পাহাড়ি মাটি ভর্তি ট্রাকের লাইন দেখে গ্রামের মানুষ অস্থির হয়ে ওঠেছে। অবিরত ট্রাকভর্তি মাটি বিক্রয় এবং ট্রাকের আসা-যাওয়ায় ওইসব সড়কের ইট ওঠে এবং রাস্তা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেছে। 

সরেজমিনে আরও দেখা যায়, প্রতি ট্রাক লালমাটি বিক্রি হচ্ছে ১৮শ’ টাকায়। ৩৫টি ট্রাকের করে দুপুর পর্যন্ত ৩৫০ গাড়ি মাটি বিক্রি হয়েছে। যার মূল্য আনুমানিক ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, জরিমানা দিয়েও বহুগুণ বেশি টাকায় মাটি বিক্রি হয় বলে পাহাড়খেকোরা মাটি কাটা থামাচ্ছে না। দেদারচ্ছে কাটছে পাহাড়ি মাটি। ওই রইস্যা পাহাড়ের লাল মাটি বিক্রয়ে ৩৭ লাখ টাকার একটি চুক্তি করেছে মাটি ক্রেতা অপর একটি গ্রুপ। ওই গ্রুপ আরও বেশি দামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রির চুক্তি করেছেন বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে।

রইস্যা পাহাড়ের মালিক দাবিবার নুরুল আবছার বলেন, ‘খতিয়ানভুক্ত আমার বাবার নামীয় পাহাড় কাটছি। তাছাড়া এটা আগে পাহাড় ছিল এখন নাল জমি। এই বলে দৃশ্যমান একটি পাহাড়কে নাল জমি বলে ২০১৭ সালের নতুন সৃজনকরা একটি খতিয়ান দেখালেন। তিনি দাবি করেন, ইউএনও যে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন তা অবিচার হয়েছে। আমরা আমাদের পৈতৃক জমি কাটছি, এটা অন্যায় নয়।’

এদিকে, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘গত রোববার সন্ধ্যায় পাহাড় কাটার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওরা যদি আবার পাহাড়কাটার সাহস দেখায় তাহলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। পাহাড় কেটে কেউ পরিবেশ ধ্বংস করতে পারবে না। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।’

এএইচ/