ঢাকা, শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৭ ১৪৩১

চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫১ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০২১ বুধবার

জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চীনের অন্যতম বৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ৬০ দিনের মধ্যে আমেরিকা থেকে সকল ধরনের কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে  হবে চীনের প্রতিষ্ঠানটিকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (এফসিসি) জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে চায়না টেলিকমের অনুমোদন প্রত্যাহার করার পক্ষে ভোট দিয়েছে।

মঙ্গলবার এফসিসি বলেছে, এই কোম্পানির ওপর চীন সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ ব্যবস্থায় তাদের প্রবেশ, তথ্য মজুদ করা, বিঘ্ন তৈরি করা বা ভুলভাবে চালানোর সুযোগ থেকে যায়। এর ফলে চীন ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি বা অন্য ক্ষতিকারক কর্মকাণ্ড চালানোর’ সুযোগ পেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে গত প্রায় ২০ বছর ধরে টেলিযোগাযোগ সেবা দিয়ে আসা চায়না টেলিকম। এই সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ বলে বর্ণনা করেছে কোম্পানিটি।

এফসিসি বলেছে, চায়না টেলিকমের আচার-আচরণ প্রমাণ করেছে যে, কমিশন এবং অন্যান্য মার্কিন সরকারি সংস্থার আস্থার স্তরকে ক্ষুণ্ন করেছে। তাদের স্পষ্টতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নির্ভরযোগ্যতার অভাব রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘জাতীয় নিরাপত্তা’র ক্ষেত্রে চীনা টেলিকম ছাড়াও অন্যান্য কোম্পানির বিরুদ্ধে একই রকম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

চীনের টেলিযোগাযোগ খাতে যে তিনটি কোম্পানির প্রাধান্য রয়েছে, তাদের একটি চায়না টেলিকম। এই কোম্পানিটি ১১০টি দেশে কোটি কোটি গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থেকে শুরু করে মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন টেলিফোন নেটওয়ার্কে এই কোম্পানিটি সেবা দিয়ে থাকে।

চায়না টেলিকম বিশ্বের ১১০টিরও বেশি দেশে যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবাগুলোর একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি।

 চীনের এই প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো, ডালাস, লসএঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক, সান জোসে, টরন্টো এবং হারন্ডন, ভার্জিনিয়াতে অফিস রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (এফসিসি) ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তারা হয়তো চায়না টেলিকমের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিতে পারে। সেখানে তারা দাবি করেছিল, ‘চীন সরকারের শোষণ, প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।’

সেখানে বলা হয়েছিল, এই প্রতিষ্ঠানটি সম্ভবত কোন রকম স্বাধীন বিচার বিবেচনা ছাড়াই চীনা সরকারের অনুরোধ মেনে চলতে বাধ্য হয়ে থাকে।

এছাড়া, গত বছর হুয়াওয়ে এবং জেডটিই-কেও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসাবে বর্ণনা করেছিল এফসিসি। এর ফলে তাদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি কেনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যায়।

এর আগে ২০১৯ সালে চায়না মোবাইলের মার্কিন লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিল এফসিসি। চায়না ইউনিকম আমেরিকান এবং প্যাসিফিক নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও এরকম ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সবগুলো ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এসব কোম্পানির মাধ্যমে চীনের সরকার আমেরিকার বিরুদ্ধে গুপ্তচরগিরি বা জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে। 

সূত্র: আল জাজিরা ও বিবিসি বাংলা

এএইচ/