মস্তিষ্কের ক্ষমতা হ্রাসের আশঙ্কা থাকে যে খাবারে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ২৮ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১২:২৮ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার
নাম, ফোন নাম্বার, জায়গার নাম মনে রাখতে পারেন না? বলা হয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তি তৈরির ক্ষমতা, দ্রুত জবাব তৈরির মতো মানসিক ক্ষমতা কমতে থাকে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ডিমেনশিয়ার (মস্তিষ্কের ক্ষমতা হ্রাস)। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে এর একটি সূক্ষ্ম সংযোগ রয়েছে। অনেকেরই এ সময় মস্তিষ্কের ক্ষমতা হ্রাসের সমস্যায় ভোগেন। যদিও আজকাল যেকোনো বয়সেই, মূলত অনিয়মের কারণে ডিমেনশিয়ার হার বেড়েছে।
এই রোগের সম্ভবনা বেড়ে যায় কিছু খাবার নিয়মিত খেলে। বয়স বাড়লে তো বটেই, যেকোনো বয়সেই এড়িয়ে চলা উচিত এই খাবারগুলো।
গবেষণা বলছে, রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বেশি থাকলে ডিমেনশিয়া হবার আশস্কাও বেশি থাকে। আর কিছু খাবারে খুব দ্রুত বেড়ে যায় রক্তে গ্লুকজের পরিমান।
যেমন- পাউরুটি জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। এই জাতীয় কার্বোহাইড্রেট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি নয়, তারাও যদি নিয়মিত এই জাতীয় খাবার খান, তাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে। বেশি চিনি খেলেও সম্ভবনা বাড়ে ডিমেনশিয়ার। অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত মাংস মানে গরুর মাংস, খাশির মাংস এক কথায় ‘রেড মিট’ জাতীয় খাবার আশষ্কা বাড়ায় ডিমেনশিয়ার। ২/৩ দিনের বেশি সপ্তাহে এই মাংসগুলো খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত চিজ খেলে একি রকম ক্ষতি হয় শরীরে।
চিকিৎসকের মতে, অতিরিক্ত তেলে ভাজা ‘ফাস্ট ফুড’ খেলে সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয় ডিমেনশিয়ার। সপ্তাহে একদিনের বেশি খাওয়া উচিৎ নয় এই জাতীয় খাবার। অতিরিক্ত মিষ্টি কেক এবং ক্রিম দেওয়া খাদ্যও বাড়িয়ে দিতে পারে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা। সপ্তাহে দু’টির বেশি খাওয়া উচিত নয় এমন খাবার।
যা হোক; মস্তিষ্কের ক্ষমতা হ্রাস হতে থাকলে বা এমন পরিস্থিতির মুখে পড়লে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই।
মগজের শক্তির জন্য বেছে নিন সঠিক খাবার। আপনার পাকস্থলী ঠিক মানে আপনার মগজও ঠিক। আপনার খাবারের ২০% শর্করা এবং শক্তি আপনার মস্তিষ্কে যায়। মস্তিষ্কের কাজের পুরোটাই নির্ভর করে তার গ্লুকোজের মাত্রার ওপর। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রায় হেরফের হলে আপনার মনেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা।
যেসব খাবার আপনারা খুব পছন্দ সেগুলো খেলে আপনার মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড এরিয়ায়’ ডোপামিন রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আপনার মনে খুশি খুশি ভাব হয়। কিন্তু মস্তিষ্কের শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার পেটের দিকেও নজর রাখতে হবে। মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রে একশো ট্রিলিয়নেরও বেশি অণুজীব বসবাস করে। এরা আপনার মস্তিষ্কের সঙ্গেও সংযোগ রক্ষা করে। মগজের সুস্থতার জন্য এই অণুজীবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি।
আসলে, পাকস্থলীকে অনেক সময় ‘দ্বিতীয় মগজ’ বলে ডাকা হয়। পেটে নানা ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার ঢুকলে এসব অণুজীবের মাধ্যমে তার সুফল মস্তিষ্কে পর্যন্ত পৌঁছায়।
টিপস :
মস্তিষ্কের কোষ ফ্যাট অর্থাৎ স্নেহ পদার্থ দিয়ে তৈরি। তাই খাবার থেকে তেল-চর্বি একেবারে বিদায় না করাই ভাল। বাদাম, তেলের বীজ, মাছ ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে জন্য ভাল। আর খাবার সময় একা একা না খাওয়াই ভাল। সবার সঙ্গে বসে খাবার খেলে তা মস্তিষ্কের জন্য সুফল বয়ে আনে।
সূত্র : আনন্দবাজার
আরএমএ/ এসএ/