বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০৬ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০২১ শুক্রবার
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাত বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, তিনি তাদের অন্যতম।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার ১০৯ নম্বর আগা সাদেক রোডের মোবারক লজে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামে, যা এখন মতিনগর নামে পরিচিত।
১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হয়েও অসীম ঝুঁকি ও সাহসিকতার সঙ্গে ভৈরবে একটি ট্রেনিং ক্যাম্প খোলেন মতিউর রহমান। সেখানে যুদ্ধ করতে আসা বাঙালি যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি।
১৯৭১ সালের ৯ মে করাচিতে কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে মতিউর রহমান একটি জঙ্গি বিমান দখল করে মুক্তিযুদ্ধের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি একটি টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে কো-পাইলট রাশেদ মিনহাজের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন।
এ সময় ভারতীয় সীমান্তের ৩৫ মাইল দূরে থাট্টায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে প্যারাসুট না থাকায় মতিউর নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা মাইল দূরে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। তবে মিনহাজ রশীদের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
১৯৬৭ সালের ২১ জুলাই মতিউর একটি মিগ-১৯ বিমান চালানোর সময় হঠাৎ আকাশে সেটা বিকল হয়ে যায়। কিন্তু অপূর্ব দক্ষতায় প্যারাস্যুটযোগে মাটিতে অবতরণ করেন তিনি। এ সময় ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে যে বিমান মহড়ার অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনিই একমাত্র বাঙালি পাইলট ছিলেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে মতিউরের অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ জাতীয় খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতিউর রহমান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন।
১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট মতিউর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। ৩৫ বছর পর ২০০৬ সালের ২৪ জুন মতিউরের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে দেশে এনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনঃসমাহিত করা হয় তাকে।
এএইচ/