বহুল প্রতীক্ষিত কপ-২৬, সফল হবে তো?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০২১ রবিবার | আপডেট: ০৫:৫৭ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০২১ রবিবার
পৃথিবীর তাপমাত্রার রাশ টানার পথ খোঁজার চেষ্টায় স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হতে যাচ্ছে কপ-২৬। এই জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের মতৈক্য এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নই জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় বলে মনে করছে আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য।
রোববার গ্লাসগোতে এই সম্মেলনে অন্তত ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে তা কিভাবে শুণ্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায় তা নিয়ে বিশদ আলোচনায় অংশ নেবেন বিশ্বনেতারা। সম্মেলন থেকে আসতে পারে গুরুত্বপুল্ণ সিদ্ধান্ত।
তবে এ সবকিছুই নির্ভর করছে, প্রতিনিধি দেশগুলো মতৈক্যের ওপর।
সম্মেলনের প্রথম দিনই বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) প্রকাশিত জলবায়ু পরিস্থিতি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দেখানো হবে। যেখানে উঠে আসবে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে নির্গত গ্রিন হাউস গ্যাসে বিশ্ব কীভাবে উষ্ণ হয়ে উঠছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীদের তৈরি ডব্লিউএমওর এই সাময়িক প্রতিবেদনে চলতি বছরের বৈশ্বিক তাপমাত্রার সঙ্গে আগের বছরগুলোর তাপমাত্রার তুলনাও দেখানো হবে। দেখানো হবে আগের চেয়ে কতটা দ্রুত বাড়ছে তাপমাত্রা।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপদাহ, বন্যা ও দাবানলের মতো চরম আবহাওয়াজনিত দুর্যোগগুলোর তীব্রতা বাড়ছে। তবে গত দশক ছিল এখন পর্যন্ত ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ দশক। এটিই পরিবেশ বিজ্ঞানীদের উদ্বেগের জায়গা। এ কারণেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত এই সম্মেলন এখন পর্যন্ত অন্যতম বড় সম্মেলন। যা গত বছর হওয়ার কথা থাকলেও মহামারীর কারণে এক বছর পিছিয়ে যায়।
রোববার মূলত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী, মূল আলোচনা হবে আগামী দুই সপ্তাহে। এই সম্মেলনে যোগ দেওয়া দেশগুলো এর আগে ২০১৫ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আলোচনায় বসলেও বিশ্বনেতারা মতৈক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় তা খুব একটা কাজে আসেনি।
এদিকে ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব দেশগুলোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিশ্বনেতারা, তাও পূরণ হয়নি। এই প্রতিশ্রুতিটি পূরণ হতে ২০২৩ সাল লেগে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
কপ-২৬-এর সাফল্য বোঝার উপায়
২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে যাতে সব দেশ একমত হয় এবারের সম্মেলনে সেই চেষ্টাই করবে আয়োজক যুক্তরাজ্য।
আর এই চেষ্টা সফল হলে কয়লা, পেট্রলচালিত গাড়ি বন্ধের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় বিভিন্ন দেশ সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেবে বলেও প্রত্যাশা যুক্তরাজ্যের।
এছাড়া উন্নত বিশ্বের কার্বন নিঃসরণের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার দেশগুলোকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থসহায়তা দেওয়ার অনুরোধ করা হবে।
এগুলোর একটিও যদি অর্জিত না হয়, তবে কপ-২৬ সম্মেলনের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে। কারণ, যে পরিমাণে তাপমাত্রা কমানো প্রয়োজন সে অনুযায়ী হতে সময় নেই একবারেই।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বিশ্বনেতারা ইতিমধ্যে অনেক দেরি করে ফেলেছেন। যে কারণে কপ-২৬ সম্মেলনে তারা যে বিষয়েই সম্মত হন না কেন, তাতেও কোনো লাভ নেই।
সূত্র: রয়টার্স
এসবি/এএইচএস