স্বেচ্ছায় রক্তদানে বেঁচে যাবে লাখো জীবন
রিয়াজ সুমন
প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
দেশে বছরে রক্তের চাহিদা প্রায় ৫ লাখ ব্যাগ। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনায় মিলছে প্রায় ৭০ ভাগ। জোগানে এমন ঘাটতি থাকায় রক্তের অভাবে প্রাণ যাচ্ছে বহু মানুষের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রক্তদানে সক্ষম জনগোষ্ঠির মাত্র ২ শতাংশ যদি স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন, তাহলে বছরে বেঁচে যাবে লাখো রোগীর জীবন।
মানবদেহের অপরিহার্য উপাদান রক্ত। ছোট-বড় নানা ধরনের অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনা, প্রসবকালীন জটিলতা, ডেঙ্গুজ্বর, থ্যালাসেমিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে দেশে প্রতিদিন প্রয়োজন দেড় থেকে দুই হাজার ব্যাগ রক্তের।
কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনায় দৈনিক যে পরিমাণ রক্ত স্বেচ্ছাদান কর্মসূচির মাধ্যমে পাওয়া যায়, তাতে চাহিদা মেটে না। ঘাটতি থাকে কমপক্ষে ৩০ ভাগ। আর এর ফলে শুধুমাত্র রক্তের অভাবেই মারা যান বহু মানুষ।
তবে, এই সংকট সমাধানের পথ খুব কঠিন নয়। সক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ২ শতাংশ মানুষ যদি স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসেন, তাতেই মিটে যায় ঘাটতি। রক্তের অভাবে মরতে হয় না কোনো রোগীকে।
বিএসএমএমইউ ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম সালেক বলেন, রক্তের বিকল্প শুধু রক্তই। এখনও আর্টিফিশিয়াল কিছু তৈরি করা যায়নি পূর্ণাঙ্গভাবে, যা রক্তের চাহিদা পূরণ করবে। সুতরাং এই রক্তটা দিতে হবে।
হাসপাতাল ছাড়াও দাতাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে রোগীদের সরবরাহ করছে দেশের বেশকটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। রেডক্রিসেন্ট, সন্ধানী, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল রক্ত সংগ্রহে রাখছে বড় ভূমিকা।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গানাইজার শামীমা নাসরিন মুন্নি বলেন, ১৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করতে পেরেছি। ৫টি স্কিনিং টেস্ট এবং ক্রস ম্যাচিং সম্পন্ন করেই আমরা রক্ত সংগ্রহ করে থাকি।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, রক্তের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশরই যোগান দেন রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা। ১০-১৫ ভাগ আসে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে। এছাড়া পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের থেকে পাওয়া যায় ১০-১৫ শতাংশ।
অধ্যাপক ডা. একেএম সালেক বলেন, পূর্ণবয়স্ক মানুষ ১৮ বছর থেকে ৫০-৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত সুস্থ সাপেক্ষে কোন জটিল রোগে না ভুগলে বছরে তিনবারের কথা বলা হয়, অন্তত দু’বার রক্ত দিতেই পারেন।
অন্যের জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যে রক্তদানের মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্মকে নিজের ১৮তম জন্মদিন উদযাপনের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।
ভিডিও-
এএইচ/