দুবলার শুটকিতে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা
মোংলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার
বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে শুরু হয়েছে শুটকি মৌসুম। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার জেলে সেখানে জড় হয়েছে। সমুদ্র মোহনা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ শেষে তা রোদে শুকিয়ে শুটকি করবেন তারা। এবার এই শুটকি মাছ থেকে তিন কোটি ২২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বনবিভাগ।
চরের অভ্যন্তরে ১৩টি মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে গঠিত দুবলার জেলে পল্লী। এই পল্লী থেকে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি বিদেশেও বাজারজাত করা হয় শুটকি।
গত মৌসুমে শুটকি আহরিত হয়েছিল ৪৫ হাজার মেট্রিক টন এবং তা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল তিন কোটি ২২ লাখ টাকা। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন কোটি ২০ লাখ টাকা। দুই লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ায় এবছর তা লক্ষ্য আদায় ধরে তিন কোটি ২২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই পাঁচ মাস বঙ্গোপসাগর পাড়ের দুবলা, মেহের আলীর, আলোরকোল, অফিস কিল্লা, মাঝের কিল্লা, শেলার চর, নারকেল বাড়িয়া, ছোট আম বাড়িয়া, বড় আম বাড়িয়া, মানিকখালী, কবরখালী, চাপড়াখালী, কোকিলমনি ও হলদাখালীর চরে জেলেরা শুটকি প্রক্রিয়া করবেন।
এ কারণে বনবিভাগ থেকে তাদের পাস পারমিট দেওয়া হয়েছে। যদিও জেলেরা নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগেই সেখোনে চলে গেছেন।
এবার মোংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, চট্রগ্রামসহ সুন্দরবন উপকূলের কয়েক হাজার জেলে মাছ আহরণ ও শুটকি তৈরির জন্য সাগরপাড়ে অস্থায়ী বসতি গড়ে তুলছেন। এজন্য জেলেদের ৯৮৫টি ঘর এবং ৬৬টি ডিপো তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা সত্যজিৎ সাহা।
তিনি বলেন, এসব ঘর বা ডিপোতে ওঠা প্রতি কুইন্টাল রুপচাঁদা ও লাটক্ষা মাছের শুটকি থেকে ১৫০০ টাকা এবং অন্য সাধারণ মাছের শুটকি থেকে প্রতি কুইন্টাল ৫০০ টাকা রেভিনিউ (রাজস্ব) আদায় করা হবে। এছাড়া জেলেদের ঘর ও ডিপো প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা রাজস্ব আদায় করা হবে বলেও জানান সত্যজিৎ।
শুটকি তৈরির জেলেরা বলেন, সমুদ্রের লোনা পানি থেকে লইট্রা, ছুরি, খলিসা, ভেদা, চিংড়ি, ইছা ও রুপচাঁদা মাছ আহরণ করেন তারা। এরপর টানা তিন থেকে চারদিন সেই কাঁচা মাছ রোদে শুকিয়ে প্রায় শুটকি তৈরি করেন।
এই শুটকি তৈরি করতে আগামী পাঁচ মাস সেখানে অবস্থানের অনুমতি পেয়েছেন তারা। এই পাঁচ মাসের প্রয়োজনীয় রসদসহ যাবতীয় কিছু নিয়ে দুবলার চরে গেছেন প্রায় ১৫ হাজার জেলে।
এএইচ/