পুরুষের একাধিক বিয়ের অদ্ভুত রীতি যে গ্রামে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২১ শনিবার
এই উপমহাদেশে পুরুষের বহুবিবাহ নতুন কিছু নয়। কিন্তু রীতিমত প্রথা মেনে দুই বিয়ে! আসলেই তাই। ভারতের রাজস্থানের একটি গ্রামের পুরুষরা অদ্ভুত এমন এক রীতির চর্চা করে আসছেন বহু বছর ধরে।
পাক-ভারত সীমান্ত লাগোয়া রাজস্থানের বাড়মের জেলার অন্তর্গত দেরাসর গ্রামের প্রাপ্তবয়স্ক সব পুরুষের আছে দু’টি করে স্ত্রী। পুরো গ্রামে সাকুল্যে বসবাস করেন মাত্র ৬০০ বাসিন্দা।
দুই বিয়ে করার অদ্ভুত রীতির পেছনের কারণটি আরও বেশি অদ্ভুত।
দেরাসরের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, প্রথম স্ত্রী থেকে কোনো সন্তান হবে না; তাই সন্তানের মুখ দেখতে দ্বিতীয় বিয়ে করতেই হবে!
আর এমন রীতির পেছনের বিশ্বাসটি হচ্ছে এমন- গ্রামের এক ব্যক্তির নাকি কিছুতেই সন্তান হচ্ছিল না, তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করার পরই সন্তান লাভ করেন।
এরপর থেকে যখনই কোনো পুরুষ এমন পরিস্থিতিতে পরতেন তখনই তাকে দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়া হত, আর তাতেই নাকি মিলত ফল। ধীরে ধীরে সেটিই রীতিতে পরিণত হয়।
এতো গেল পুরনো বিশ্বাসের কথা, আরও একটি কারণও রয়েছে। গ্রামে পানীয়জলের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। ফলে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে পরিবারের জন্য জল আনতে হয় নারীদের পায়ে হেঁটে। অন্তঃসত্ত্বা কোনো নারীর পক্ষেই কাজটি দুরূহ।
ফলে দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন গ্রামের পুরুষরা। সেক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর সেভাবে কোনো অধিকার থাকে না। তাদের ভূমিকাটা তখন হয়ে যায় বাড়ির পরিচারিকার মতো; সেভাবেই কাটে তাদের বাকি জীবন। এজন্য প্রথম স্ত্রীকে বলা হয় ‘জল স্ত্রী’।
সন্তানধারণ তো দূরের কথা, স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অধিকার থাকে না প্রথম স্ত্রীর।
কেউ এই রীতির বিরোধিতা করলে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায় পুরো গ্রাম, কখনও কখনও তাকে করা হয় একঘরে কিংবা গ্রাম বিতাড়ন।
দ্বিতীয় স্ত্রীও সন্তানধারণে সক্ষম না হলে স্বামী আরেকটি বিয়েও করতে পারেন। তবে উপার্জনকারী স্বামীকে পুরো পরিবারেরই দায়িত্ব নিতে হয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন
এএইচএস/