ধর্মঘট প্রত্যাহার: সড়কে চলছে বাস
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪২ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০২১ রবিবার
ডিজেলচালিত দূরপাল্লার বাস ও নগর পরিবহনের ভাড়া নতুন করে নির্ধারণের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়কে বাস চলাচল শুরু করেছে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বিভিন্ন পরিবহনের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাজধানীর বিআরটিএ ভবনে দিনভর বৈঠকের পর বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের পর রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ বিআরটিএর মিটিংয়ের পর সারাদেশে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট তুলে নিয়ে বাস চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমার আহ্বান থাকবে এখন থেকে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হোক।আমি বাসের মালিকদের অনুরোধ করব, ধর্মঘট প্রত্যাহার করে যেন দেশ স্বাভাবিক অবস্থা হয়। সব জেলা থেকে যেন বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
ঢাকা-নোয়াখালী রুটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা-নোয়াখালী রুটে আমাদের বাস চলা শুরু হয়েছে।’
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক মালিক সমিতির চেয়ারম্যান ও শ্যামলী এনআর পরিবহনের মালিক রাকেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, বিআরটিএর মিটিং শেষ হওয়ার পর আমাদের বাস চলা শুরু হয়ে গেছে।
দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বেড়ে এক টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। মহানগরে বাসের ভাড়া এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে দুই টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন হতে পারে।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর মহাখালীতে বিআরটিএ ভবনে পরিবহন মালিক ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। পরিবহন মালিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা আসে। রাতেই তা কার্যকর হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের নতুন দর হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা যা এতদিন ছিল ৬৫ টাকা।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মালিক ও শ্রমিকরা।
গত চার দিনের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশ। ঘর থেকে যারা বের হয়েছেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। পথে পথে ছিল দুর্ভোগ। শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। ভর্তি ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা পড়েছেন আরও বিপাকে। কয়েক গুণ ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে তারা কেন্দ্রে পৌঁছেন।
যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে অফিসগামী যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা চলাচল করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ছিল। এ সুযোগে এসব যানবাহনে নেওয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায়ই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান, কাভার্ডভ্যানে চড়েও যাচ্ছেন কর্মস্থল ও গন্তব্যে।
ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ও পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ট্রাক, বাসসহ পরিবহনের জ্বালানি হিসেবেই ডিজেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রাক ভাড়া বাড়লে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যাবে। দাম বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। চাপ পড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।
আরকে//