ঠাকুরগাঁওয়ে তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, প্রতিবেশী গ্রেফতার
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ৮ নভেম্বর ২০২১ সোমবার
গ্রেফতারকৃত প্রতিবেশী আলম
ঠাকুরগাঁও শহরের রোড বাজারের পাশে হরিহরপুর খালপাড়া এলাকায় এক তরুণীকে (২৫) বিবস্ত্র করে চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগে আলম (৫২) নামের এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (৮ নভেম্বর) খালপাড়ায় নিজ বাসা থেকে আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আলম হরিহরপুর এলাকার মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে। আর নির্যাতিত তরুণী একই এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর মেয়ে।
নির্যাতিতা জানান, প্রতিবেশী আলমসহ আরও ৭ জন নারী-পুরুষ মিলে শনিবার রাতে তাকে বাসায় ডেকে নেয়। তরুণীর ভাষ্যমতে, এসময় প্রতিবেশী আলম তাঁর মেয়ের সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ এনে আমাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে আমার মাথার সব চুল কেটে দেয় তারা। বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে আমি নিজে বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছি।
অভিযোগ তুলে ওই তরুণী আরো বলেন, আমি এমন কোনো অপরাধ করিনি অথচ আমাকে চোর-ডাকাতের মত ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। আমার কাপড় ছিঁড়ে চুল কেটে দিয়েছে। তারা তাদের মেয়ের সাথে আমার কোন অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তুলছে- আমি বুঝতে পারছি না। একটা মেয়ের সাথে আরেকটা মেয়ের সম্পর্ক থাকাটা কীভাবে সম্ভব- বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
নির্যাতিতার মা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মা-মেয়ে মিলে শহরের বিভিন্ন বাসায় ঝি-এর কাজ করে কোনরকম দিন যাপন করছি। সময়ে-অসময়ে স্থানীয় বখাটেরা বিভিন্ন অপবাদ দেয় আমাদেরকে। এবার আমার মেয়ের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে- আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত আলম জানায়, আমার মেয়ের সাথে ওই তরুণী অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। এজন্য আমি মেয়ের বিয়ে দিতে পারছি না। তাই মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলাম। কিন্তু মেয়েটি সব অস্বীকার করে আমার উপরে মেজাজ দেখাতে থাকে। তাই আমার মেয়ে আর প্রতিবেশী মোবারক আলী মেয়েটিকে চর-থাপ্পড় দিয়ে পরনের কাপড় ছিড়ে চুল কেটে দিয়েছে।
বিষয়টিতে তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে এলাকাবাসী। ওই এলাকার বাসিন্দা সালাম জানান, মেয়েটির বাবা নেই। মা মেয়ে কাজ করে খায়। এভাবে মেয়েটিকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি।
ঠাকুরগাঁও থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পরেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং সেখানে একজনকে পাওয়া গেলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ওই তরুণী নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামালায় এজাহার নামীয় ১নং আসামি আলমকে ধরা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এনএস//