ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:১০ পিএম, ৮ নভেম্বর ২০২১ সোমবার

অনিয়ম, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে আজিম-কাসেম সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। 

সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ইউজিসি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিম উদ্দিন ও এমএ কাসেম সিন্ডিকেটের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতিকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানানো হয়।

এসময় বক্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অল্প দামের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে ট্রাস্টিদের কমিশন বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের টাকায় ট্রাস্টিদের গাড়ি বিলাস, এক লাখ টাকা করে সিটিং এলাউন্স, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ এলাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি, অতিরিক্ত বিভাগ খোলাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

তারা বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় জঙ্গি মদদের অভিযোগ বারবার অস্বীকার করলেও তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে ফুটে উঠেছে জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার পুরনো রূপ। ব্লগার রাজীব হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি নাফিস ইমতিয়াজকে পুনরায় ভর্তি করার সিদ্ধান্ত সবার মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। সবকিছুর পেছনে দায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দিন ও এমএ কাসেম নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন-প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেনজির আহমেদ, রেহেনা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আজিজ আল কায়সার টিটো। প্রয়োজনে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার দাবি জানানো হয়।

তারা আরও দাবি করেন, বারবার এ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল দপ্তরে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দুদক ও ইউজিসিসহ অন্যান্য সংস্থার কালক্ষেপণ রাষ্ট্রের জন্য দুর্যোগ বয়ে আনতে পারে বলে বক্তারা দাবি করেন। আর সে কারণেই বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এড. মহিউদ্দিন জুয়েল, সংগঠনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস, বাংলাদেশ সংবাদপত্র (গণমাধ্যম) কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার, বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান এম ইব্রাহিম পাটোয়ারি, সাংবাদিক নেতা কালিমুল্লা ইকবালসহ আরো অনেকে। 

মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বরাবর  ৮ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। দাবি সমূহ হলো- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসির নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, আজিম-কাসেম ও তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি, আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এমএ কাসেমের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও গ্রেফতার, সকল আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও আজিম-কাসেমসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ, ব্লগার রাজিব হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাফিস ইমতিয়াজকে পুনরায় ভর্তি করানোর উপযুক্ত ব্যাখ্যা ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতার তদন্ত, আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের স্বজনপ্রীতির হাত থেকে রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণসহ সর্বোপরি আজিম-কাসেমকে গ্রেফতার করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করা। মানববন্ধনে মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র-অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এসি