নোয়াখালী ম্যাটস ভবনে তালা, হামলা ও সংঘর্ষে আহত ৩
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:১৭ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
স্টাফ সিন্ডিকেট মুক্ত ক্যাম্পাস, পরীক্ষায় স্টাফ গার্ড বাতিল, তিন শিক্ষকের বহিস্কার ও ছাত্রী হোস্টেলে নারী সুপার দেয়াসহ ৮ দফা দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে নোয়াখালী মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ভবনের মূলফটকে তালা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে সাঈদ সৈকতকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের কোথাও ম্যাটস-এর হলগুলোর দায়িত্বে কোনো স্টাফ থাকে না, হলের দায়িত্বে থাকেন শিক্ষক। অথচ নোয়াখালী ম্যাটস-এ ছাত্রী হলে পুরুষ স্টাফ ও ছাত্র হোস্টেলেও স্টাফ দায়িত্বে রয়েছে। এখানে স্টাফরা পরীক্ষায় গার্ড দিচ্ছে, স্টাফদের স্যার বলতে শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ক্যাম্পাস খোলা থাকলেও লাইব্রেরির সুবিধা পাচ্ছে না। ছাত্রী হোস্টেলের সিসি টিভি ক্যামেরার দায়িত্ব পুরুষ স্টাফকে দেয়া হয়েছে।
এসব ঘটনায় তারা অবস্থান নিলে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী ও হামলাকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৩ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের দাবী মেনে না নিলে আগামী ২৭ নভেম্বরের পরীক্ষা বর্জনের হুমকিও দেয় তারা।
আন্দোলনরত তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহি উদ্দিন হৃদয় বলেন, ক্যাম্পাসে স্ট্যাফ সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। পরীক্ষার হলে সাধারণ স্টাফরা গার্ড দেয়, তাদেরকে স্যার বলতে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের জামায়াত শিবিরের কিছু শিক্ষার্থী স্টাফদের সঙ্গে যোগসাজস করে আমাদের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন, দেশের কোথাও কোন মহিলা হোস্টেলের দায়িত্ব পুরুষ স্টাফের কাছে থাকে না। কিন্তু আমাদের এখানে হোস্টেল ও হোস্টেলের ভিতরে সিসি টিভির দায়িত্ব পুরুষ স্টাফের কাছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের হোস্টেলে একজন মহিলা সুপার দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ম্যাটস এর অধ্যক্ষ মো. হাবিব-উল-করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবী যৌক্তিক। তাদের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা রাজি হয়নি। আন্দোলনকারীদের দাবীগুলোর মধ্যে যেগুলো মেনে নেয়ার মতো, সেগুলো সমাধানের কাজ করছি।
এনএস//