ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

জলবায়ু সম্মেলন: উদ্বেগ প্রকাশ করেই দায় সারছেন বিশ্ব নেতারা

সাইদুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১১:৪০ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২১ বুধবার

উদ্বেগ প্রকাশ করেই দায় সারতে চাইছেন বিশ্ব নেতারা। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অর্থ সহায়তা দেয়ার ইস্যুতে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থায় ব্যয়বহুল প্রযুক্তির নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো কঠিন বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। প্রায় একই মত বিশেষজ্ঞদের।
 
চরম উষ্ণতা থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে চলছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। মূল ভেন্যুতে যখন বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমাতে ৭০টি এজেন্ডা নিয়ে চলছে আলোচনা, তখন বাইরে থেমে নেই ন্যায্য দাবি আদায়ের বিক্ষোভ।

আলোচনায় ঘুরে ফিরেই আসছে তেল-কয়লার ব্যবহার কমানোর তাগিদ। তবে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ধনী দেশগুলো অর্থ সহায়তা না দিলে রাতারাতি ব্যয়বহুল প্রযুক্তির বিকল্প জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়।  

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘নেপাল-ভুটানকে আমরা সংযুক্ত করতে চাই। তাদের হাইড্রো পাওয়ার নিব আমরা। ভারত থেকে নিতে পারি। আমাদের নিজেদের ক্ষেত্রেটা বাড়াতে পারি। তবে নিজেদের ক্ষেত্র বাড়াতে গেলে খরচ বেড়ে যাবে। কেননা আমাদের প্রচুর জ্বালানি লাগবে।’
 
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা হলেও অভিযোজনে সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যমাত্রা নেই। ১৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণকারি উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু তহবিলে অর্থ ছাড়ের আহ্বান তাদের। 

পরিবেশ বিজ্ঞানী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিক রহমান বলেন, “বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। কিন্তু বড়লোকের দেশ বলে দিয়েছে যে, দুটো ব্যাপারে কোন আলোচনা হতে পারবে না। এটা প্যারিস এগ্রিমেন্ট হয়ে গেছে। একটা হচ্ছে কম্পেন্সেশন অর্থাৎ আমাকে টাকা দাও, আরেকটা হচ্ছে অ্যাক্টিভিয়েশন মানে কার দায়িত্ব, কে ক্ষতি করেছে একথা বলতে পারবে না। এ দুটো বাদ দিয়ে আসেন আমরা যুক্তি করি। এটা হচ্ছে রাজনীতি।”

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণ ইস্যুতে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি জরুরি বলছেন এই বিশেষজ্ঞ।

নদী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল মেকানিজমে যে টাকাটা আসছে, সেটার অর্ধেক আমরা দাবি করছি অ্যাডাপটেশনে দিতে হবে, আর অর্ধেক মেটিকেশনে। তো সেটা নিয়ে জিন্দাবাদ চলবে। এখন যারা টাকাটা দিচ্ছে তাদের মাথাব্যথা হচ্ছে মেটিকেশনে।

ক্ষতিপূরণ আদায়ে দরকষাকষির সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থ ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধিরও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে একুশ শতকে গিয়ে দাঁড়াবে ২.৭ শতাংশের উপরে। আর সেটি হলে চরম সংকটে পড়বে খাদ্যসহ বিভিন্ন সমস্যায় পুরো বিশ্ববাসী। এবারের জলবায়ু সম্মেলন থেকে এমন একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে যেক্ষেত্রে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন করা যায়।

ভিডিও-

এএইচ/