ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

যৌনতার পরেই বিয়ের নিয়ম যে জাতিতে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:০৭ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২১ বুধবার | আপডেট: ০২:১০ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২১ বুধবার

ভারতের ছত্তিসগড়ের আদি জাতিগোষ্ঠী গোন্ড। তাদেরই একাংশের নাম ‘বাইসন-হর্ন মারিয়া’। নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্কের যে সংজ্ঞা রচনা করেছে এই জাতি তা আজও বিষ্ময়। পুঁথিগত শিক্ষা কিংবা সভ্য সমাজের ছাপ না থাকলেও একমাত্র যৌনতার রীতিতেই সভ্য সমাজ থেকে অনেক এগিয়ে এই জাতি। 

ছত্তিসগড়ের জগদলপুরে মূলত এই জাতির বাস; যাদের বিশ্বাস বিয়ের আগে নারী-পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠা আবশ্যক। আর সেই সম্পর্কে সন্তুষ্ট হলেই কেবল বিয়ে করা উচিত। তাহলেই নাকি পরবর্তীকালে দাম্পত্যের বন্ধন আরও অটুট হবে। 

আর পুরুষ বা নারী যেকোনও একজনও যদি সেই সম্পর্কে খুশি না হন তাহলে যেকোনও সময় তারা সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন বিনা বাধায়। 

মাথায় বাইসনের শিং দিয়ে বানানো উপকরণে সাজতে দেখা যায় এই জনগোষ্ঠীর মানুষকে। তাই ‘বাইসন হর্ন মারিয়া’ নামেই পরিচিত এই উপজাতি।

তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে ভালোবাসা না থাকলে সেই সম্পর্ক বয়ে নিয়ে চলার কোনও অর্থ নেই। যে কারণে বিয়ের পরেও যদি কেউ অন্য নারী কিংবা পুরুষে আকৃষ্ট হন তাহলে নির্দ্বিধায় ছেড়ে যেতে পারেন সঙ্গীকে। 

এই স্বাধীনতা নারী-পুরুষ উভয়েরই সমানভাবেই ভোগ করেন। এ ক্ষেত্রে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্কে কোনও নারীর সন্তান হলে, তাকেও খুব স্বাভাবিকভাবেই আপন করে নেয় পুরো পরিবার।

আর যদি কোনও নারীর স্বামীর মৃত্যু হয় তাহলে তার জন্য নতুন পাত্র খোঁজেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই। ধুমধাম করে আয়োজন হয় বিধবাবিবাহের।

এ জন্য এক বিশেষ ধরনের উৎসবও রয়েছে তাদের। যেখানে ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত অবস্থায় এই জাতির পুরুষ ও নারীরা উল্লাসে মাতেন।

১৯৩৮ সালে প্রকাশিত ব্রিটিশ আমলা ডাব্লিউভি গ্রিগসনের একটি বইয়ের সূত্র ধরে গোন্ডদের এই জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। 

সেখান থেকে প্রকাশ্যে আসে গ্রিগসনের লেখা ‘দ্য মারিয়া গোন্ডস অফ বস্তার’, যা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালগুলোর পাঠ্যক্রমেও রয়েছে। 

গ্রিগসনের বইয়ের তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, এখনও আগের নিয়ম মেনে চলছে এই উপজাতির মানুষেরা।  

তবে সম্প্রতি এই জাতির কথা যত ছড়িয়ে পড়ছে ততই নাকি তাদের আবাসস্থলে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ক্রমে শহুরে সভ্যতা ও বিদেশি পর্যটকদের ভিড় এই জনজাতির মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে! 

সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন 

এসবি/