ঢাকা, রবিবার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৭ ১৪৩১

ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেন ফিলিপাইনি নারী

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৩৩ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৩:৪৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২১ শনিবার

ফল ঘোষণার পর পেট্রিয়াকা (জেসমিন)কে মালা পড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান গ্রামবাসী

ফল ঘোষণার পর পেট্রিয়াকা (জেসমিন)কে মালা পড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান গ্রামবাসী

প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে আসা এক নারী ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যদিয়ে বিদেশী মহিলা মেম্বার পেলো বাংলাদেশ। 

গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাধাকানাই ইউনিয়নের সংরক্ষিত (১, ২ ও ৩ নম্বর) ওয়ার্ডে জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা মাইক প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে চার হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিমু আক্তার পেয়েছেন এক হাজার ৮৩৭ ভোট। 

জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ফিলিপাইনের নামি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ বিভাগ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরে সিঙ্গাপুরে চাকরি করতে গিয়ে পরিচয় হয় বাংলাদেশি তরুণ ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়ার জুলহাস উদ্দিনের সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর বিয়ে।

২০১০ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের পর বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিক জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। তিনি খ্রীস্টান থেকে মুসলিম হওয়ার পর নাম রাখেন জেসমিন আক্তার জুলহাস। জম্মসূত্রে ফিলিপাইনের নাগরিক হলেও বিবাহসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক জেসমিন আক্তার জুলহাস। 

জুলহাসের প্রেমের টানে ১০ বছর আগে জীন ক্যাটামিন মা-বাবা ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

বিজয়ী হওয়ার পর ফিলিপাইনের নারী জেসমিনকে এক নজরে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন আশপাশের গ্রামের মানুষ। তার মুখে ইংরেজি কথা শুনে অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করেন। স্বামী জুলহাস মিয়া দোভাষী হিসেবে সাধারণ মানুষের কথা ইংরেজিতে অনুবাদ করে বুঝিয়ে দেন জেসমিন আক্তারকে।

পরিবারের সঙ্গে ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা (জেসমিন)

ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দবরদস্তা গ্রামের আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে জুলহাস। ১৯৯৮ সালে সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে চাকরি করার সময় সহকর্মী জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। 

পরে চাকরি ছেড়ে জুলহাস বাংলাদেশ চলে আসেন, জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকাও তার দেশে ফিলিপাইনে চলে যান। তবে ফোনে দুজনের যোগাযোগ ছিল।

স্বামী জুলহাস জানান, জেসমিন মানুষকে নানাভাবে উপকার করার চেষ্টা করেন। তার ভেতর নেতৃত্বের গুণ রয়েছে। তাই এলাকাবাসীর অনুরোধে সংরক্ষিত মেম্বার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছে জেসমিন।

নির্বাচিত ইউপি মেম্বার জেসমিন আক্তার জুলহাস (জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা) বলেন, আমার স্বামী জুলহাসের জন্য নিজের দেশ ও বাবা-মাকে ছেড়ে বাংলাদেশে ছুটে আসি। এ দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত, এলাকার গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।

মানুষের ভালোবাসা নিয়ে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হতে পারে খুবই আনন্দিত তিনি। 

এএইচ/