‘কঙ্গনা’র বিতর্কিত মন্তব্য, পদ্মশ্রী ফিরিয়ে নেয়ার দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:১৩ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২১ শনিবার
বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানৌতের পদ্মশ্রী ফিরিয়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহে’র অভিযোগ আনার দাবি জানিয়েছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। সেইসঙ্গে তাকে গ্রেপ্তারেরও দাবি তোলা হয়েছে।
কঙ্গনাকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির একজন কট্টর সমর্থক বলে মনে করা হয়। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে বছর ক্ষমতায় আসেন, সেই ২০১৪ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছে।
এ সময় তিনি ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভকে ‘ভিক্ষায় পাওয়া’ (ভীক) বা ‘হস্তান্তর’ বলে মন্তব্য করেন। তার এ মন্তব্যের জেরে ভারতজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ভারতের টেভিভিশন চ্যানেল টাইমস নাও ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানে কঙ্গনা ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে বলেন, ‘সেটা স্বাধীনতা ছিল না, ছিল ভিক্ষা, আর প্রকৃত স্বাধীনতা এসেছে ২০১৪ সালে।’
চলতি মাসে ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষ থেকে কঙ্গনাকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেয়া হয়। এ ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি পুরস্কার কঙ্গনার ঝুঁলিতে রয়েছে।
ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম রাথ কোবিন্দকে ট্যাগ করে টুইটারে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘মিস রানৌতকে দেয়া পদ্ম পুরস্কার অতি শিগগিরই ফিরিয়ে নেয়া উচিৎ। এ ধরনের পুরস্কার দেয়ার আগে মনস্তাত্বিক অবস্থাটাও দেখা জরুরি, যাতে এ ধরনের লোক জাতি ও তার নায়কদের অপমান করতে না পারে।’
তিনি কঙ্গনা রানৌতের বক্তব্যকে ‘লজ্জার’ ও ‘জঘন্য’ বলে বর্ণনা করেন। এ মন্তব্যের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, সরদার বল্লবভাই প্যাটেলসহ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রাণ হারানো ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন কংগ্রেসের এই নেতা।
অবশ্য মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা নওয়াব মালিক একটু ভিন্নভাবে কঙ্গনার এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কঙ্গনা নেশার ঘোরে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানৌতের এ বক্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছি।’
নওয়াব মালিক অভিনেত্রী কঙ্গনাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘কঙ্গনা রানৌতের পদ্মশ্রী ফিরিয়ে নিতে হবে এবং তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
এর আগে কঙ্গনা রানৌতকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন খোদ বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধী। বৃহস্পতিবার তিনি কঙ্গনার সমালোচনা করে প্রশ্ন করেন, ‘এটা কি পাগলামি, নাকি বিশ্বাসঘাতকতা?’
এক টুইটে বরুণ লিখেন, ‘কখনো মহাত্মা গান্ধীর বলিদানকে অপমান করা, কখনো তার হত্যাকারীদের প্রশংসা; আর এখন মঙ্গলপান্ডে, রানি রক্ষ্মিবাই, ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ, নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুসহ লাখো স্বাধীনতা যোদ্ধার বলিদানকে অস্বীকার। এসব ভাবনাকে পাগলামি বলবো, নাকি বিশ্বাসঘাতকতা?’
সূত্র : এই সময়
এমএম/ এসএ/