ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

১০ বছর পর ফুটলো একজোড়া নাইট কুইন

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:০৩ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২১ সোমবার

রুলিনা খাতুনের বাগানে একজোড়া ‘নাইট কুইন’

রুলিনা খাতুনের বাগানে একজোড়া ‘নাইট কুইন’

নাটোর শহরের মল্লিকহাটি এলাকার বাসিন্দা রুলিনা খাতুনের বাড়িতে রাতের রানী হিসেবে পরিচিত ‘নাইট কুইন’ গাছে একজোড়া ফুল ফুটেছে। দুর্লভ প্রজাতির এই গাছ রোপণের ১০ বছর পর ফুটলো ফুল। এই নাইট কুইন ফোটার খবরে প্রতিবেশী অনেকেই ছুটে আসেন ওই বাড়িতে। 

রোববার রাতে মিষ্টি মনোহারিণী সুবাস, দুধসাদা রঙ, স্নিগ্ধ ও পাঁপড়ির এই একজোড়া ‘নাইট কুইন’ ডানা মেলে সুগন্ধ ছড়ায় সারা এলাকায়। 

এক সাথে দুটি ফুল ও ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে অনেকেই বিমোহিত হন। রোপণকৃত গাছে নাইট কুইন ফোটার আনন্দে উদ্বেলিত নাটোর কালেক্টরেট অফিসের কর্মচারী আব্দুল ওয়াহেদের মেয়ে রুলিনা খাতুনসহ পরিবারের সকলেই। 

পরিবারের সবাই মিলে রাত জেগে উপভোগ করেছেন। ফুলের মিষ্টি গন্ধে মোহিত হয়েছেন সবাই।

রুলিনা খাতুন বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নাইট কুইন গাছের ডাল এনে বাড়িতে রোপণ করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ কয়েক বছর নিয়মিত নিবিড় পরিচর্যা করেছেন। ক’মাস আগে কলি এলেও তা ফোটার আগে ঝড়ে পড়ে। এর আগে রাতে গাছের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বসে থেকেছি। কিন্তু এবার আর ‘রাতের রানী’ হতাশ করেননি।

১০ বছর অপেক্ষার পর রোববার বিকেল থেকেই গাছে দুটি কলি অদ্ভুত সুন্দররূপে সাজে। রাত ১১টার দিকে ডানা মেলে নিজের সৌন্দর্যে স্বমহিমায় প্রকাশিত হয় নাইট কুইন। এর অদ্ভুত মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ফুলের গন্ধে গোটাবাড়ি সুবাসিত হয়ে যায়। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন ফুল দেখতে, জানান তিনি।

ফুল দেখতে আসা রুলিনা খাতুনের নিকটাত্মীয় সোহেল রানা বলেন, রাতে শোনামাত্রই তিনি এই নাইট কুইন দেখতে এসেছেন। ফুলটি দেখে অনেক ভালো লেগেছে তার।

প্রতিবেশী সিমি বেগম ও জেহাদ বলেন, তারা নাইট কুইনের নাম শুনেছেন। বাস্তবে কখনও দেখেননি। এবার স্বচক্ষে নাইট কুইনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়েছেন তারা।

জানা যায়, বিরল ক্যাকটাস জাতীয় এ ফুলটির বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ফুলের তুলনায় একটু আলাদা। বহু আরাধ্য ও অপেক্ষার পর দেখা দেয় বলেই হয়তো নাইট কুইনকে সৌভাগ্যের প্রতীকও বলা হয়। তবে সৌভাগ্য আর কাহিনী ছাপিয়ে ফুলটির অপার সৌন্দর্যই একে ‘রানী’ উপাধি দিয়েছে। 

পাথরকুচির মতো পাতা থেকেই এ ফুলগাছের জন্ম হয়। আবার পাতা থেকেই প্রস্ফুটিত হয় ফুলের গুটি।  দেখতে অনেকটা পদ্মফুলের মতো, সাদা রং ও মিষ্টি গন্ধযুক্ত। বছরের মাত্র একদিনে এবং মধ্যরাতে পূর্ণ বিকশিত হয় নাইট কুইন। আর শেষরাতেই তার জীবনাবসান ঘটে। ১৫ দিন পর গুটি থেকে কলি হয়। যে রাতে ফুলটি ফুটবে, সেই বিকেল থেকেই কলিটি অদ্ভুত সুন্দর রূপে সাজে। 

ফুলটির সুবাসে তীব্রতা না থাকলেও অদ্ভুত মিষ্টি এক মোহ আছে। যা পুষ্পপ্রেমীদের সবসময়ই টানে। সারা দুনিয়ায় নাইট কুইন নিয়ে নানা কাহিনী রয়েছে।

এএইচ/