ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

বিলুপ্তির পথে চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প (ভিডিও)

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৩১ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

বিলুপ্তির পথে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প। একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হস্তচালিত তাঁতযন্ত্র। কঠোর পরিশ্রম, কম মজুরি আর যান্ত্রিক তাঁতযন্ত্রের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে পেশা বদল করছেন অনেকেই।

আলমাডাঙ্গার ১৫-১৬টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা এক সময় তাঁত বুনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। হস্তচালিত তাঁতযন্ত্রের খট খট শব্দে মুখরিত থাকতো গ্রামের পর গ্রাম। সময়ের পরিক্রমায় বদলে গেছে চিত্র। এখন অনেকগুলো বাড়ি পার হলে তারপর কানে আসে তাঁতের শব্দ।

তাঁতীরা জানান, সারাদিন কাজ করেও ১০০ টাকা আয় করা কষ্টকর। সূতার দাম বাড়লেও বাড়েনি শ্রমিকের মজুরি। অন্যদিকে যন্ত্রচালিত তাঁতযন্ত্রের কাছে মার খাচ্ছে হস্তচালিত যন্ত্র। বংশ পরম্পরায় চলে আসা তাঁতযন্ত্র এখন তাঁতিদের কাছে কষ্টের স্মৃতি।

তাঁতীরা জানান, আমরা এখন নিজেরা করছি না, মেয়েছেলেরা বসে থেকে যেটুকু পারে করছে। ছেড়ে দিলে বিষয়টা কেমন হয়, বাবা-দাদারা সবাই করেছে। চার পিস কাপড় তৈরি করলে ৩০ থেকে ৪০ টাকা আয় হয়। কি করে এর ভেতর থাকবে? এখন সূতার দাম বেশি কিন্তু মালের দাম সেভাবে বাড়েনি। এ জন্য এই কাজে আর আমাদের পোষাচ্ছে না। সরকারি সহযোগিতা পেলে এলাকার অনেক তাঁতী বেঁচে থাকতে পারতো, জানান তারা।

আয় কমে যাওয়ায় আলমডাঙ্গার তাঁতীরা জীবন-জীবিকার তাগিদে পেশা বদলে হয়ে গেছেন কুলি-মজুর, রিকশাচালক অথবা রাজমিস্ত্রী। আর বাড়িতে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে ঐতিহ্যবাহী তাঁতযন্ত্র। কয়েকটি বাড়িতে নারীরা অবসরে তাঁত বুনে বাঁচিয়ে রেখেছেন পৈতৃক পেশা।

আলমডাঙ্গা তন্তুবায় শিল্প-সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু মুছা জানান, তাঁতী সম্প্রদায় এবং হস্তশিল্প এই এলাকা থেকে বিলীন হয়ে যাওয়ার দাঁড়প্রান্তে।

চুয়াডাঙ্গা বিসিক উপ-ব্যবস্থাপক মো. সামসুজ্জামান বলেন, তাঁতশিল্পেরা যদি বিসিকের কাছে আসে, তারা যদি কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা চায় তাহলে বিসিক অবশ্যই তাদের সহায়তা করছে।

দেশীয় এই শিল্পকে বাঁচাতে সহযোগিতার দাবি তাঁতীদের।

ভিডিও-

এএইচ/