ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ছেলেকে সুস্থ করতে ঘরেই ওষুধ বানাচ্ছেন বাবা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৪০ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২১ বুধবার

পৃথিবী দেখা মাত্র দু’বছর, যাকে বলে মাত্র শুরু। এরমধ্যেই থমকে যেতে চলেছে শিশু হাওইয়াংয়ের জীবন। হাওইয়াংয় এই অল্প বয়সেই ভুগছে এক কঠিন রোগে। 

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির হাতে রয়েছে অল্প সময়। কারণ দূরারোগ্য মেঙ্কস সিনড্রোমে আক্রান্ত এই শিশুটির শরীর।

তবে তাকে সারিয়ে তুলতে যে ওষুধের প্রয়োজন তা মিলছে না সে দেশে। আবার করোনাভাইরাস মহামারীতে বাধা পড়েছে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া। তাই নিজেই ওষুধ বানাতে মন দিয়েছেন শিশুটির বাবা। আর এজন্য রীতিমত গবেষণাগার বানিয়ে নিয়েছেন বাড়িতেই। 

চিনের কুনমিং শহরে বাড়িতেই গবেষণাগার তৈরি করেছেন হাওইয়াংয়ের বাবা জু ওয়েই। নিজেই তৈরি করেন ওষুধ এবং খাওয়ান ছেলেকে।

গবেষণার সিদ্ধান্তে জু যখন পৌঁছান তার পাশে ছিল না কেউ। ‘এটা অসম্ভব’ বলেছিলেন সবাই। তবে ইচ্ছা ও জেদের কাছে হেরে যায় সব। 

শিশুটির বাবা জু ওয়েই বলেন,  ‘‘ভাবার সময় ছিল না। যা করার করতে হত।’’

 মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশের জন্য শরীরে কপার বা তামা জরুরি। তবে হাওইয়াং যে রোগে আক্রান্ত,  তাতে এই কপার ঠিক মতো তৈরি করতে পারে না তার শরীর। ফলে তার বছর তিনেকের বেশি বাঁচা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে স্কুল পাস বাবা জু হাল ছাড়তে নারাজ । ছোট এই ব্যবসায়ির ধ্যান-জ্ঞান এখন একটাই— ছেলেকে লড়াইয়ের সুযোগটা অন্তত দেয়া।

ছেলেকে কোলে নিয়ে মধু মেশানো জল খাওয়াতে খাওয়াতে জু বলেন, ‘‘আমার ছেলে নড়তে বা কথা বলতে পারে না ঠিকই,  তবে ওর মধ্যে জীবন আছে, আবেগ আছে।’’

জু জানান , অনলাইনে মেঙ্কস সিন্ড্রোম নিয়ে যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল সবই ইংরেজিতে। অনুবাদ সফ্টওয়্যারের সাহায্যে তা পড়তে থাকেন জু। যখন বোঝেন ‘কপার হিস্টিডাইন’  ছেলের অবস্থা পরিবর্তনে সাহায্য করতে পারে, তখন দেরি না করে তার বাবার জিমেই ওষুধটি তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মজুদ করে ফেলেন।

এখন জু নিজের বানানো ওষুধটি নিয়মিত খাওয়াচ্ছেন ছেলেকে। জু-এর দাবি,  এই চিকিৎসা শুরুর দু’সপ্তাহ পর থেকে সন্তানের দু’টি রক্তপরীক্ষার ফল আবার স্বাভাবিকে ফিরেছে। এখনও কথা না বললেও গায়ে হাত বোলালে নাকি হাসি ফুটে ওঠে হাওইয়াংয়ের ঠোঁটে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা 

আরএমএ