ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধ মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি মোমিনের ফাঁসির রায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৫৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২১ বুধবার

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বগুড়া-৩ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বগুড়ার আব্দুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার ফাঁসির রায় দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আসামি পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আব্দুল মোমিন তালুকদার। তিনি বগুড়া-৩ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন দুইবার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী আবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ৩১ অক্টোবর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

সকাল পৌনে ১০টার দিকে রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ের ২৫৬ পৃষ্ঠার মধ্যে সার-সংক্ষেপ পাঠ করা হয়। প্রথম অংশ পড়েন বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। এর পরের অংশ বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার এবং সর্বশেষ ও দণ্ড ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। 

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে এ মামলাটির তদন্ত কাজ শুরু করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা জেডএম আলতাফুর রহমান। এ মামলায় জব্দ তালিকা ছাড়াও ২৯ জনকে ঘটনার স্বাক্ষী করা হয়। বিচারের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে আবদুল মোমিন তালুকদার বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুইবার বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেসময় তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

মোমিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তিন অভিযোগ

* ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদারসহ ৫ থেকে ৬ জন স্বাধীনতাবিরোধী ও ২০ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্যকে নিয়ে বগুড়া জেলার আদমদিঘী থানার কলসা বাজার, রথবাড়ী এবং তিয়রপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করতে অপারেশন চালান। ওই দিন আসামি নিজে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কলসা গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ইসলাম উদ্দিন প্রামাণিকসহ হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেন।

* ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে একই থানার কাশিমালা গ্রামের ১৬ থেকে ১৭টি বাড়ি লুট করেন মোমিন। সেদিন ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

* ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে আব্দুল মোমিন তালুকদার রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নিয়ে আদমদিঘী থানার তালশন গ্রামের অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন।

এএইচ/