ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ম্যারাডোনার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

সময় চলে যায় সময়ের গতিতে। রেখে যায় শুধুই স্মৃতি। দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গেল ফুটবল মহানায়ক দিয়েগো ম্যারাডোনার চলে যাওয়ার। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন এ ফুটবল জাদুকর। আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন এ দিনে।

ম্যারাডোনা ক্লাব পর্যায়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন ৮ বছর বয়সে। ১৯৭৫ সালে যোগ দেন আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স ক্লাবে। টানা ৬ বছর এই ক্লাবের হয়ে খেলেছেন তিনি। এর মাঝে ১৯৭৭-৭৯ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনা আন্ডার টোয়েন্টি দলের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন সাবেক এই ফুটবলার।

১৯৭৭ সালে জাতীয় দলে নাম লেখান দিয়াগো ম্যারাডোনা। জাতীয় দলের হয়ে ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার চারটি আসরে অংশ নেন তিনি। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই খেলোয়াড়ের নেতৃত্বেই ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ পায় আর্জেন্টিনা।

জাতীয় দলের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ক্লাবের হয়ে লড়েছেন আর্জেন্টিনার সাবেক এই খেলোয়াড়। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বোকা জুনিয়র্স, বার্সালোনা, নাপোলি, সেভিয়া এবং নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেছেন তিনি।

দুইবার স্থানান্তর ফির বিশ্ব রেকর্ড রয়েছেন ম্যারাডোনার। ১৯৮২ সালে বোকা জুনিয়র্স থেকে বার্সালোনায় স্থানান্তরের সময় ৫ মিলিয়ন ইউরোর রেকর্ড গড়েন তিনি। এরপর ১৯৮৪ সালে বার্সালোনা ছাড়ার সময় ৬.৯ মিলিয়ন ইউরোর রেকর্ড গড়েন তিনি।

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ আসরে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন ম্যারাডোনা। ওই প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচই তাকে স্মরণীয় করে রাখবে বলে বিশ্বাস করেন ফুটবলের বিশ্ব তারকা এবং বিশেজ্ঞরা। ওই ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা; আর দলের হয়ে দুটি গোলই করেন ম্যারাডোনা। প্রথম গোলটি বিতর্কিত হলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি শতাব্দীর সেরার গোল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল।

ম্যারাডোনাকে ক্রীড়া জগতের সবচেয়ে বিতর্কিত এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের অন্যতম হিসেবে মনে করা হয়। ১৯৯১ সালে ইতালিতে ড্রাগ টেস্টে কোকেইন পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়ায় ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ইফিড্রিন টেস্টে আবারও ইতিবাচক ফলাফলের জন্য প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয় তাকে।

২০০৮ সালের নভেম্বরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান ডিয়াগো। ২০১০ বিশ্বকাপের পর ১৮ মাসের চুক্তি শেষ হওয়ায় দায়িত্ব ছাড়েন তিনি।

ফুটবল বিশ্বে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা ম্যারাডোনা সমান জনপ্রিয় ছিলেন বাংলাদেশেও। লাল-সবুজের এ দেশে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যারা এ মহানায়কের নাম শোনেনি কখনো। বিশ্বকাপ এলেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই মেরুতে ভাগ হয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু তর্কাতীতভাবে প্রিয় ফুটবলারের তালিকায় সবার শীর্ষে ম্যারাডোনা।

বিশ্ব ফুটবলের এই কিংবদন্তির মৃত্যুর পরও নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক জন্ম দিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য হৃৎপিণ্ড ছাড়াই কবর দেওয়া হয়েছিল ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে। 

উল্লেখ্য, কী কারণে ম্যারাডোনার মৃত্যু হয়েছিল সেটার অপরাধ তদন্ত চলছে তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
এসএ/