ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

আমিও দাবি করি, যেন সেই খুনির ফাঁসি হয়: মেয়র তাপস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানের হত্যাকারীর বিচারের দাবিসহ ছাত্রদের অন্যান্য দাবির সাথে শুধু একমত পোষণই নয়, ঘাতক সেই খুনির ফাঁসিও দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। 

আজ বৃহস্পতিবার নগর ভবনের সামনে নিহত শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সমাবেশে এসে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়র বলেন, ‘আমি জানি এই কষ্ট কি? একজন মেধাবী ছাত্র নাঈম আমার এই সিটি করপোরেশন এলাকার সড়কে আমার করপোরেশনের গাড়ি দ্বারা দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে নিহত হবে, সেজন্য আমি রাজনীতিতে আসিনি। আমার কাছে আমার সন্তানের সুখ, সন্তানের হাসি, সন্তানের ভালোবাসা অনেক অনেক মূল্যবান। আপনারা যে দাবি দিয়েছেন, সেই দাবির সাথে আমি শুধু একমত পোষণই নয়; শুধু সম্মতিই নয়; আমি আরও দাবি করি, যেন সেই খুনির ফাঁসি হয়। আমি দাবি করি, এই শহরের সড়কে আর যেন কোনও নাঈমের প্রাণহানি না ঘটে।’   

ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে ওয়াদা করছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সকল জঞ্জাল মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। আমাদেরকে তারপরেও আইনের আওতায় থাকতে হয়। আমাদেরকে সরকারি নীতিমালা-নিয়মকানুন মানতে হয়। মেনে চলতে হয়। সেই নিয়মকানুন মেনেই গাড়ি চালকের গাড়ি চালানো দায়িত্ব ছিলো। সে সেই দায়িত্ব পালন করেনি। আরেকজন ভাড়াটিয়া গাড়ি চালককে দিয়ে গাড়ি চালিয়েছে। সুতরাং সবাইকেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। যার দায়িত্ব ছিলো তাকে আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং ইনশাআল্লাহ চাকরি থেকে অপসারণ করবো। যেই চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় ছিলো সেই খুনি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি ইনশাআল্লাহ আমরা নিশ্চিত করবো। আপনাদের সাথে কণ্ঠে কণ্ঠ লাগিয়ে আমি বলি; সেই খুনির ফাঁসি চাই।’

এ সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবির পক্ষে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এডভোকেসি করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনও বহিরাগত যেন ডিএসসিসির কোন গাড়ি চালাতে না পারে, সেই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। আপনাদের যে দাবি এসেছে আমি আপনাদের হয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত আপনাদের পক্ষে অ্যাডভোকেসি করবো। সরকারের কাছ থেকে সকল দাবি আদায়ের ব্যবস্থা করবো। ঢাকা নিরাপদ শহর হবে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ছিলো। নিরাপদ সড়ক করতে আপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো।’

নাঈমকে নিজের সন্তানতুল্য উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘সম্প্রতি আমি আমার সন্তানের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে এসেছি। কিন্তু আসার দিনেই আমি নাঈমকে হারাবো সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। নাঈম শুধু আপনাদের ভাই না, আপনাদের বন্ধু না, একটি সতের বছরের আমার সন্তান।’

সন্তান হারা পিতা-মাতাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমিও মাত্র পৌনে চার বছরে আমার পিতা-মাতাকে হারিয়েছি। আমার মনেও কষ্ট ছিলো। আমার মনেও আক্রোশ ছিলো। বড় হয়ে পিতামাতার হত্যার বিচার নেবো। নিজ হাতে খুনিদেরকে খুন করবো। কিন্তু আমি করি নাই। আমি সব কষ্ট বুকে ধারণ করে আমার মার শর্ত পূরণ করেছি। মানুষের মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি। শিক্ষা গ্রহণ করে পিতা-মাতা হত্যার বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য এজলাসে দাঁড়িয়েছি।’

এ সময় মেয়র ছাত্রদের দাবি মেনে নাঈমের নামে এ বছরের মধ্যে দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন।

এসি