কখনো নারী, কখনো পুরুষ বাংলাদেশি এই বিউটি ব্লগার (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ০১:৫২ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২১ শনিবার
সাদ বিন রাবী ওরফে সাদ মুআ
মেকআপ টিউটোরিয়ালসহ বিউটি কেয়ার নিয়ে নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যান মেকআপ আর্টিস্ট সাদ বিন রাবী ওরফে সাদ মুআ। পরিচিতি পান ‘বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ বিউটি ব্লগার’ হিসেবে।
সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে একজন ‘নন-বাইনারি’ হিসেবে পরিচয় দেন সাদ মুআ। দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে ‘নন-বাইনারি’ পরিচয়ে চলতে গিয়েও প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন সাদ। তবে পরিবার পাশে থাকায় পথ চলাটা অনেকটাই সহজ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ফেসবুকে দুই লাখ, ইনস্টাগ্রামে ২৭ হাজার ফলোয়ার এবং ইউটিউব চ্যানেলে ৫৬ হাজার সাবস্ক্রাইবার নিয়ে একজন মেকআপ শিল্পী হিসেবে তিনি এখন সবার পরিচিত মুখ। তার ভিডিও কন্টেন্ট মূলত মেকআপ টিউটোরিয়াল নিয়ে। যেখানে তিনি নিজের চেহারাতেই বিভিন্ন ধরনের বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে দেখিয়ে থাকেন। একইসঙ্গে তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিউটি ব্র্যান্ডগুলোর প্রোমোশনও করেন।
ভিডিও কন্টেন্টগুলো তিনি তৈরি করেন মূলত নারী দর্শকদের উদ্দেশ্য করে। বিষয়গুলো বহুমুখী হওয়ার কারণে তাঁর মেকআপগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ আর সমসাময়িকও হয়ে থাকে।
২১ বছর বয়সী সাদ সামাজিক মাধ্যমে নিজের যাত্রা শুরু করেন সেই ২০১৮ সালে। সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে তিনি একজন সামাজিক মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারকারী হয়ে উঠছেন।
তিনি জানান, মেকআপের প্রতি আকর্ষণটা তাঁর শৈশব থেকেই। তখন তিনি প্রায়ই তাঁর মায়ের মেকআপ প্রসাধনীগুলো লুকিয়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করতেন। তাঁর এই মেয়েলী বৈশিষ্ট্যের কারণে তাকে বেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নকে জীবনে বাস্তবায়ন করা। এমনকি এই একবিংশ শতাব্দীতেও পুরোনো চিন্তাধারার সামাজিক ব্যবস্থার মাঝে তাঁকে খুঁজতে হয়েছিলো একটি সাহায্যের হাত।
তবে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাঁর সম্প্রদায়কে সেবা দেয়ার জন্য তাঁকে কিছু একটা খুঁজে বের করতেই হবে। আর সেটা খুঁজতে গিয়েই সামনে এল মেকআপের বিষয়টি।
আসলে, তাকে কোথাও যেতে হয়নি। তার সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিলো- তার চেহারা এবং তিনি জানতেন যে, কীভাবে একে ব্যবহার করতে হয়। অর্থাৎ তিনি অবশ্যই একজন পুরুষ বিউটি ব্লগার হতে পারেন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটা ছিল- তার বিঃশ্বাস। এই দক্ষতাটিই সম্পূর্ণরূপে তাঁর ব্যক্তিত্বের সাথে যায়।
সাদ বিশ্বাস করেন যে, মেকআপ কেবল একটি নারীর জিনিস নয়। এটি একজন পুরুষের ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক। আপনি যা পছন্দ করেন তা কখনোই জোর করে আসার কথা নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্বতঃস্ফূর্ততা।
এরপরও, মহান বিপ্লবের পথে একটি ছোট পদক্ষেপের জন্য প্রয়োজন একটুখানি উৎসাহ। আর এই উৎসাহ ছিলেন সাদের দাদী। তিনি সাদের পিতামাতার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাদকে মেকআপ সরঞ্জাম কিনতে সহায়তা করেছিলেন। এছাড়া সাদের নিজেরও যথেষ্ঠ চেষ্টা ছিলো তাঁর মেকআপের ওপর দক্ষতা অর্জনের জন্য।
যাইহোক, সাদের কাজের মূল্যায়ন হওয়া শুরু করে নারী-পুরুষ উভয়ের দিক থেকেই। আর এখন তিনি প্রায়ই নতুন কিছু নিয়ে স্ক্রিনে আসার চেষ্টা করেন।
সম্প্রতি কোরিয়ান মেকআপের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন সাদ মুআ। আর এভাবেই তিনি প্রতিটি ছিটেফোঁটায় নিজের ভেতরের শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর দর্শকদের সামনে পরিবেশন করে থাকেন। সূত্র- বিবিসি বাংলা।
এনএস//