ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুর হানাদার মুক্ত দিবস

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:২৬ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার | আপডেট: ১২:২৯ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার

৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর হানাদার মুক্ত দিবস। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে লক্ষ্মীপুর জেলা ছিল পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষত-বিক্ষত।

১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালিয়ে এ জেলায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। এর মধ্যদিয়ে জেলাবাসী মুক্তিপায় হত্যা, লুট, আর নির্যাতনের হাত থেকে।

লক্ষ্মীপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে ১৭টি সম্মুখ যুদ্ধসহ ২৯টি দু:সাহসিক অভিযান চালান। এতে শহীদ হন ১১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মুক্তিকামী বাঙালি। 

পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে সর্বপ্রথম মুক্তিযোদ্ধারা লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম ব্রীজটি উড়িয়ে দেয়। এর স্মৃতি হিসেবে আজও ব্রীজের লোহার পিলার দাঁড়িয়ে আছে। 

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পাকহানাদার বাহিনী শহরের বাগবাড়ীতে ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিকামী হাজার হাজার নর-নারীকে ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন চালাত। পরে যুবতীদের পাশবিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে বাগবাড়ীস্থ গণকবর, মাদাম ব্রীজ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পুতে ফেলতো। অনেককেই ফেলে দিত খরস্রোতা রহমতখালী নদীতে। 

নারকীয় এসব হত্যাযজ্ঞের নিরব সাক্ষী হয়ে আছে শহরের বাগবাড়ীস্থ গণকবর, মাদাম ব্রীজ, পিয়ারাপুর ব্রীজ ও মজুপুরের কয়েকটি হিন্দু ও মুসলমান বাড়ি।

১৯৭১ সালের ২১ মে ভোর রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর ও দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় পাকহানাদার বাহিনী। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগসহ বহু মানুষকে গুলি ও বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। এতে শহীদ হন প্রায় ২১ মুক্তিকামী বাঙালি। 

একাত্তরের ১ ডিসেম্বর থেকে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং সুবেদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সাঁড়াশি আক্রমণ চালায় হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে। অবশেষে ৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় হানাদার বাহিনী ও এর দোসররা।

এএইচ/