ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ায় সেমেরুর অগ্নুৎপাতে নিহত ১, আহত অর্ধশত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০০ এএম, ৫ ডিসেম্বর ২০২১ রবিবার

অগ্ন্যুৎপাতের চিত্র

অগ্ন্যুৎপাতের চিত্র

ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপ জাভাতে সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি সেমেরুর হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তার ঢালে জ্বলন্ত ছাইয়ের কুণ্ডলী, দমবন্ধ করা গ্যাস এবং জ্বলন্ত লাভা ছড়িয়ে পড়ছে। এতে দগ্ধ হয়ে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং অর্ধশত লোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মূলত ভারী বৃষ্টির কারণেই শনিবার হঠাৎ করে এই অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে এবং শত শত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নিজ নিজ এলাকা ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

এদিন দেশটির দুর্যোগ প্রশমণ সংস্থার (বিএনপিবি) শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে লুমাজাং জেলার আশেপাশের কয়েকটি গ্রামকে প্রচণ্ড ধোঁয়া ও ছাই ঢেকে ফেলার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কে দৌড়াতে দেখা যায়।

লুমাজাং জেলার ডেপুটি চিফ ইন্দাহ মাসদার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪১ জন দগ্ধ হয়েছে। পরে বিএনপিবি জানায় যে, ৩৫ জন রোগীকে স্থানীয় মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে, স্থানীয় একটি ভবনের ভেতরে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার চেয়ে পাঠিয়েছে উল্লেখ করে ইন্দাহ মাসদার বলেন, সেখানে অন্তত ১০ জন আটকা পড়েছে। তাঁরা বড় সঙ্কটের মধ্যে আছে। আসলে এটা বড়ই বেদনাদায়ক, তাদের পরিবারের সদস্যগুলো সবাই কাঁদছে।

লুমাজংয়ের জেলা প্রধান থরিকুল হক বলেন, একটি খনির কাছে বেশ কয়েকজন বালু খনির শ্রমিক আটকা পড়ে আছে। তিনি রয়টার্সকে বলেন, লুমাজাং এবং নিকটবর্তী শহর মালাংয়ের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তা এবং সেতুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

থরিকুল হকের ভাষায়, "এটি বিস্ফোরণের পর থেকে খুব শোচনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।" সেইসঙ্গে উদ্ধারের কাজও চলছে বলে যোগ করেন তিনি।

থরিকুল হক স্থানীয় টিভি ওয়ানকে বলেন, “ছাইয়ের ঘন কুণ্ডলী বেশ কয়েকটি গ্রামকে অন্ধকারে পরিণত করেছে। শতশত লোককে অস্থায়ী আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বা অন্য নিরাপদ এলাকায় চলে গেছে।

এদিকে, বিএনপিবি প্রধান সুহরিয়ানতো জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য তাঁবু স্থাপন করেছে কিন্তু ঘন ধোঁয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

দেশটির টেলিভিশনের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগ্নেয়গিরির ধূলিকণা মিশ্রিত বৃষ্টিতে ভেজা লোকজন একটি বিশাল ছাই মেঘের নিচে আতঙ্কে দৌড়াচ্ছে।

এদিকে, এই অগ্ন্যুৎপাতে অবশ্য বিমানের ফ্লাইটে তেমন "উল্লেখযোগ্য কোনও প্রভাব সৃষ্টি করেনি" বলেই এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ইন্দোনেশিয়ার আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণকারী এয়ারন্যাভ ইন্দোনেশিয়া।

মূলত ইন্দোনেশিয়া হল প্রায় ১৩শ দ্বীপের সমন্বয়ে এমন একটি দ্বীপপুঞ্জ যেখানে ২৭ কোটিরও বেশি অধিবাসীর বাস করে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় "রিং অফ ফায়ার" বরাবর অবস্থিত হওয়ায় অনেকাংশেই ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ প্রবণ অঞ্চল।

দেশটিতে প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির রয়েছে। যার মধ্যে দেশটির সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ জাভা দ্বীপের সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৭৬ মিটার (১২ হাজার ৬০ ফুট) উচ্চতার সেমেরুতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল গত জানুয়ারিতেও। তবে সেবার কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সূত্র- এপি, রয়টার্স।

এনএস//