অনিয়মে ডেল্টা লাইফের ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা ক্ষতি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ৫ ডিসেম্বর ২০২১ রবিবার
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সাসপেন্ডড পরিরচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ৩ হাজার ৬শ’ ৮৭ কোটি টাকা লোপাটের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অডিট রিপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, মানিলন্ডারিং, অর্থ আত্মসাৎ, রাজস্ব, ফাঁকি, বকেয়া এবং অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উপরোল্লেখিত অর্থ ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নিয়োগ করা অডিট ফার্ম একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস এ নিরীক্ষা চালায়। নিরীক্ষার ফলাফল এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে, প্রতিষ্ঠানটির নিযুক্ত অডিট ফার্ম মেসার্স একনবীনের দেওয়া প্রভিশনাল ইন্টেরিম রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এ তথ্য পেয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
অডিট প্রতিবেদনের চিঠি গত বুধবার (১ ডিসেম্বর) অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে ৭৪ পৃষ্ঠার রিপোর্ট কর্তৃপক্ষবরাবর পাঠানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপ-সচিব) মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে নিয়োগকৃত অডিট ফার্ম মেসার্স একনবীন কর্তৃক বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রভিশনাল ইন্টেরিম রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে।
এতে বীমা কোম্পানিটিতে প্রাথমিকভাবে উদঘাটিত অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
প্রতিবেন সূত্রে আরও জানা যায়, গত ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত ভ্যাট ৩৫ কোটি ও ট্যাক্স ৩শ’ ৩০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বীমা পলিসি গ্রাহকদের মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা দাবী ও মৃত্যু দাবীর পাওনা বাবদ ১৩৮ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে। এতে বীমা পলিসি গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে মানিলন্ডারিং এর মতো অপরাধ সংগঠিত হওয়ার বিষয়েও উল্লেখ করা রয়েছে বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
উল্লেখ্য, গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার কারণে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদ চার মাসের জন্য সাসপেন্ড করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
একই সাথে কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে বীমা কোম্পানিটিতে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বীমা খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এরপর ১০ জুন ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ সাসপেন্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আদেশ দেয় আইডিআরএ। নির্ধারিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণ না হওয়ায় এ আদেশ জারি করা হয়।
অপরদিকে সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লার মেয়াদ চার মাস হলে ডেল্টা লাইফের পরামর্শকের দায়িত্বে থাকা সাবেক যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানের নতুন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ।
১০ অক্টোবর ২০২১ তারিখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রশাসক (যুগ্ম সচিব-অব.) মো. রফিকুল ইসলাম।
গত ১৩ অক্টোবর কোম্পানির সাবেক সদস্য মো. কুদ্দুস খানকে ডেল্টা লাইফের প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছে আইডিআরএ। অডিট রিপোর্টে উদঘাটিত সকল অনিয়ম দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বীমা আইন ২০১০ মোতাবেক পলিসি গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষনার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরে অবগত করা সহ পত্র প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে।
এসি