রাজকন্যা, দুবাই শেখ ও ৫০ কোটি পাউণ্ডের বিবাহবিচ্ছেদ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৭ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
প্রিন্সেস হায়া ও শেখ মোহাম্মদ
দুবাইয়ের কোটিপতি শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম ও তাঁর বহুল আলোচিত সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল-হুসেইনের বিবাহ-বিচ্ছেদ বহুলাকাঙ্ক্ষিত মামলার রায় হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে ৫০ কোটি পাউণ্ডের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন প্রিন্সেস হায়া।
তবে মঙ্গলবার এই রায়ে জর্ডানের সাবেক রাজা হুসেইনের কন্যা ৪৭ বছর বয়স্ক প্রিন্সেস হায়াকে এককালীন ২৫ কোটি ১৫ লাখ পাউণ্ড দিতে বলেছে দেয়া ব্রিটিশ আদালত। প্রিন্সেস হায়া ছিলেন দুবাই শাসক শেখ মোহাম্মদের ষষ্ঠ এবং কনিষ্ঠতম স্ত্রী।
শেখ মোহাম্মদ শুধু দুবাইয়ের ধনাঢ্য শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি বিশ্ব ঘোড়দৌড়ের জগতেও রেসের ঘোড়ার একজন প্রভাবশালী মালিক।
প্রিন্সেস হায়া ২০১৯ সালে তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে ব্রিটেনে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, শেখ মোহাম্মদ এর আগে তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে শেখ লতিফা ও শেখ শামসাকে অপহরণ করিয়েছেন। ফলে তিনি এখন তাঁর নিজের জীবন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছেন। এই দুই সন্তানের মধ্যে কন্যার বয়স ১৪ বছর এবং পুত্রের বয়স নয় বছর।
প্রিন্সেস হায়া তাঁর এক ব্রিটিশ দেহরক্ষী তথা সাবেক সেনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। আর এটা জানার পরই শেখ মোহাম্মদ "তুমি বেঁচে ছিলে, তুমি মরে গেছো" নামে একটি কবিতা প্রকাশ করেন। যাতে তাকে হুমকি দেয়া হয় বলে অনুমান করা হয়। জর্ডানের এই রাজকন্যা বলেন, ব্রিটেনে পালিয়ে আসার পরও তিনি হুমকি পেয়েছেন।
ব্রিটিশ আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, দুবাইয়ের এই শাসকের ঘরে প্রিন্সেস হায়ার দুই সন্তানের প্রত্যেককে প্রতিবছর ৫৬ লাখ পাউণ্ড দিতে হবে এবং তা ২৯ কোটি পাউণ্ডের একটি গ্যারান্টি দিয়ে সুরক্ষিত করা থাকবে।
এছাড়াও রায়ে রাজকন্যার নিরাপত্তা ব্যয়, ছুটি কাটানোর খরচ, একজন নার্স ও আয়ার বেতন এবং আবাসনের খরচ, পরিবারের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং তাঁর পালিত ঘোড়া ও অন্যান্য প্রাণীর খরচও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আইনী জগতের ইতিহাসে একে সবচেয়ে বড় বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা হিসেবেই আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
প্রিন্সেস হায়ার ব্রিটেনে বহু লক্ষ পাউণ্ড মূল্যের দুটি বাড়ি রয়েছে এবং এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের খরচের কথাও রায়ে উল্লেখ রয়েছে। এ বাড়িগুলোর একটি লন্ডনের কেনসিংটন প্রাসাদের পাশেই এবং অপরটি সারে কাউন্টির এগহ্যামে।
এর আগে, চলতি বছর হাইকোর্ট এক রুলিংয়ে বলে যে, শেখ মোহাম্মদ অবৈধভাবে প্রিন্সেস হায়া, তাঁর দেহরক্ষী এবং আইনজীবী দলের ফোন হ্যাক করিয়েছিলেন। আর এ জন্য ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করা হয়।
তবে শেখ মোহাম্মদ বলেন, তাঁর কাছে কোনও হ্যাক করে পাওয়া সামগ্রী নেই এবং তাঁর অনুমোদন নিয়ে কোনও নজরদারি চালানো হয়নি। সেইসঙ্গে প্রিন্সেসের কোনও ক্ষতি করার ইচ্ছেও তাঁর নেই বলেও উল্লেখ করেন এই দুবাই শাসক। সূত্র- বিবিসি।
এনএস//