চলন্ত লঞ্চে পুড়ে অঙ্গার ৩০ যাত্রী, আহত বহু মানুষ
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৫৫ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার
ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে দগ্ধ হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এ ঘটনায় কমপক্ষে ৭৫ জন দগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটিতে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করেছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের ডিউটি ম্যান ফায়ারম্যান শাওন মৃধা জানান, রাত তিনটা পয়ত্রিশ মিনিটের দিকে ত্রিপল নাইনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনা স্থলে গিয়ে কাজ শুরু করি এবং পর্যায় ক্রমে ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করে। এখন পর্যন্ত দগ্ধ ৭০ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে, লঞ্চের বডি গরম থাকায় উদ্ধার কাজ কিছুটা দেরি হচ্ছে।
লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “লঞ্চে পাঁচ শতাধিক যাত্রী থাকলেও আগুনে ৭০-৮০ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।”
এদিকে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক বিল্লাল উদ্দিন বলেন, “খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি।”
এ ঘটনায় আহত হয়ে ৬৫ জন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাত থেকে আটটি শিশু রয়েছে। আহতদের বেশিরভাগেরই শরীরের বিভিন্ন স্থান দগ্ধ হয়েছে।
এদিকে লঞ্চে আগুনের খবর শুনে বরগুনা ও এর আশেপাশে এলাকা থেকে স্বজনরা ঝালকাঠি লঞ্চঘাট এলাকায় এসেছেন। তাদের আহাজারিতে এখানকার পরিবেশ ভারি হয়ে গেছে।
ভোর ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন উদ্ধারকাজে নিয়োজিতরা।
এসএ/